হার্ট থেকে হাড়ের স্বাস্থ্য, চুল থেকে ত্বকের উজ্জ্বলতা সব কিছুতেই আখরোটের জুড়ি মেলা ভার। আখরোটের অনেক গুণ। কিন্তু সবচেয়ে বড় গুণটি হলো মাথার পুষ্টি। অনেকেই এমনিই আখরোট খান। খেতে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি এতে রয়েছে প্রচুর গুণ। সেই কারণে মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য এই বাদাম নিয়মিত খাওয়া উচিত। বাদাম খেতে পছন্দ করেন যারা, তাদের কাছে আখরোট বেশ পরিচিত। তবে ফ্যাট আছে মনে করে অনেকে এই বাদাম এড়িয়ে চলেন। আসলে কিন্তু তা নয়। এতে থাকা ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্রোটিন ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নানাভাবে শরীরের উপকার করে থাকে। আখরোট ক্যান্সার, হৃদরোগ সারানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। তবে একসঙ্গে অনেক আখরোট খাওয়া যাবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ উপায়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি আখরোট খেলেই রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে।
জেনে নিন নিয়মিত আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী: আখরোটে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ভালো করতে সাহায্য করে। মানসিক চাপের অনুভূতি কমায়। এগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে, স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে খুব কার্যকর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে এগুলো খেলে ভুলে যাওয়া কমে যায় এমনকী আলজাইমার রোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
হার্টের স্বাস্থ্য ভলো করে: আখরোটে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে যা শরীর থেকে খারাপ চর্বি দূর করতে সাহায্য করে, যার মধ্যে অ্যালফালিনোলিক অ্যাসিড রয়েছে যা ধমনীতে ফ্যাটি জমা প্রতিরোধ করে। ফলে হার্ট সুস্থ থাকে। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
আখরোটের উপকারিতা: আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি উপাদান বাদাম এবং বীজে পাওয়া যায়। প্রতিটি বাদামের নিজস্ব অনন্য স্বাদ এবং সুবিধা রয়েছে। এই বাদাম এবং বীজ বিশেষ করে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। এখন যদি প্রশ্ন করা হয় মাথার জন্য কোন বাদাম সবচেয়ে উপকারী? তার উত্তর হল আখরোট। আখরোটের আকৃতিও মানুষের মস্তিষ্কের মতো। আখরোট হল পুষ্টগুণ সমৃদ্ধ, ওমেগা-৩ ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এগুলো মস্তিষ্কের কোসের ক্ষয়, হৃদরোগ এবং ক্যানসার থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, আখরোটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন রয়েছে। তাই এগুলোকে সুপারফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আখরোট খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। আখরোট সাধারণত হালকা খাবার হিসাবে খাওয়া হয়। এটি সালাদ, পাস্তা, স্যুপের মতো খাবারেও যোগ করা হয়। আখরোট থেকেও তেল বের করা হয়। এটি প্রায়শই সালাদ ড্রেসিংয়ে ব্যবহৃত হয়, আখরোট থেকে সবচেয়ে ব্যয়বহুল রান্নার তেল তৈরি করে।
অন্যান্য লাভ: আখরোটে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো শরীরের হাড় গঠনের জন্য এবং পেশি শক্তিশালী রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আপনার পাচনতন্ত্রের জন্য খুব ভালো। এ ছাড়াও, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, আয়রনের মতো খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ আখরোট খেলে ওজন কমে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ত্বক নরম ও চকচকে করতে এবং চুল পড়া রোধেও আখরোট চমৎকার।
প্রতিদিন কতটা খাবেন: আখরোটের উপকারিতা নির্ভর করে আপনি দিনে কতটা খান এবং কীভাবে খান। খুব বেশি খাবেন না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে, দিনে ৩ থেকে ৪টি আখরোট খাওয়াই যথেষ্ট। আখরোট খাওয়ার আগে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পানিতে ভিজিয়ে রাখা আখরোট সকালের খাবারে বা সন্ধ্যার হালকা খাবারের সঙ্গে খেতে পারেন।