English

25.9 C
Dhaka
সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করছেন তো বিপদ ডেকে আনছেন

- Advertisements -

অলস ভঙ্গিতে কাজ করছেন মানেই ধীরে ধীরে ক্ষয় হচ্ছে আপনার শরীর। আজকের দিনে ঘর থেকে কাজ করা বা ওয়ার্ক ফ্রম হোম অনেকের জীবনের বাস্তবতা। নিজ বাসায় থাকলে একটু আরামে শুয়ে বসে থাকতে কে না চায়। তবে এটিই আপনার বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সোফায় হেলান দিয়ে, বিছানায় শুয়ে বা বালিশে হেলান দিয়ে ল্যাপটপে টাইপ করা অনেকেরই অভ্যাস। যন্ত্রটার নামও তো আবার ল্যাপ-টপ, অর্থাৎ কোলের ওপর রেখে কাজ করার কম্পিউটার। কিন্তু এই আরামদায়ক ভঙ্গি যে আপনার কতটা ক্ষতি করছে, তা আপনি এখন টের পাচ্ছেন না। যখন পাবেন, তখন হয়তো দেরি হয়ে যাবে। যেসব ক্ষতি হচ্ছে এই অভ্যাসের কারণে-

১. মেরুদণ্ড ধীরে ধীরে বিকৃত হয়ে যাচ্ছে

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিএমপি পাবলিক হেলথ্-এ প্রকাশিত একটি মেটা‑বিশ্লেষণে দেখা যায় যে দিনে ৬ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় বসে থাকা ঘাড়ে ব্যথার ঝুঁকি প্রায় ৮৮% পর্যন্ত বাড়ায়, বিশেষ করে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার এই ঝুঁকি বাড়ায়।

শুয়ে বা কাত হয়ে ল্যাপটপে কাজ করলে ঘাড়, পিঠ ও কোমরের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। দীর্ঘসময় এভাবে কাজ করলে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন এভাবে চললে হতে পারে ডিস্ক স্লিপ, স্পাইনাল ডিসঅর্ডার বা চিরস্থায়ী পিঠ ব্যথা।

২. চোখের ওপর বাড়তি চাপ

শোয়া অবস্থায় স্ক্রিনের সঙ্গে চোখের সঠিক দূরত্ব রাখা সম্ভব হয় না। ফলাফল? চোখ শুকিয়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া এবং ঘন ঘন মাথাব্যথা। এই সবই ডিজিটাল আই স্ট্রেইনের লক্ষণ।

৩. ল্যাপটপের অতিরিক্ত গরমে ত্বকের ক্ষতি

অনেকেই শুয়ে শুয়ে পেটের ওপর বা কোলের ওপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করেন। এতে শরীরের সংবেদনশীল অংশে গরম ল্যাপটপের তাপে চামড়ার ক্ষতি হয়। একে বলা হয় `টোস্টেড স্কিন সিনড্রোম’ – যা দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের রঙ পাল্টে দিতে পারে। এমনকি প্রজনন ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি হসপিটাল বেসেলের ১০টি কেস‑স্টাডিতে দেখা গেছে- ল্যাপটপ পায়ের উপর রেখে ব্যবহারে ত্বকে নেটের মতো দাগ তৈরি হয় এবং বিরল ক্ষেত্রে ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরী হয়।

৪. কাঁধ ও গলার পেশিতে টান ধরে

অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে কাজ করলে গলার পেশি শক্ত হয়ে যায়। এই পেশি সরাসরি কাঁধ ও মাথার পেছনের অংশে সংযুক্ত। তাই আপনি গলা টান অনুভব করেন, ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, এমনকি মাথা ঘোরা বা মাইগ্রেনের উপসর্গও দেখা দিতে পারে।

৫. মনঃসংযোগ নষ্ট ও ক্লান্তি বাড়ে

বিছানার মতো ঘুমের জায়গায় কাজ করলে মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয় – সে বুঝতে পারে না আপনি বিশ্রাম নিচ্ছেন না কাজ করছেন। ফলে মনঃসংযোগ নষ্ট হয়, সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা কমে, কাজের মানও খারাপ হয়। এবং দিনের শেষে পুরো শরীরে বাড়তি ক্লান্তি ভর করে।

সচেতন হোন, এই অভ্যাসগুলো আজই বদলান। যেভাবে কাজ করলে এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন-

>> বিছানা বা সোফায় নয়, টেবিল-চেয়ারে বসে কাজ করুন।

>> চোখের উচ্চতায় স্ক্রিন রাখুন্

>> প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পর ৫ মিনিট উঠে হাঁটুন।

> শোয়ার জায়গা শুধু ঘুমের জন্য ব্যবহার করুন।

>> দৈনিক স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম করুন।

>> অফিসের কাজের জন্য বাড়িতেই একটি অফিস ঘর বা ডেস্ক নির্ধারিত রাখুন।

আরাম তো চাই-ই, কিন্তু সেটি যদি শরীরের ক্ষতির কারণ হয়, তবে সেটি আর আরাম নয়, বরং ক্ষতিকর অভ্যাস। তাই শুয়ে শুয়ে কাজ করাকে যদি এখনও আরাম মনে করেন, তাহলে এখনই ভাবনার সময় এসেছে। কারণ আপনার ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য আজকের অভ্যাসের ওপর নির্ভর করছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/s2py
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন