বিটের উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। এই উজ্জ্বল লাল সবজিটি রঙে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি গুণেও অনন্য। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, ফাইবার, ফোলেট, আয়রন এবং নানা ভিটামিন, যা শরীরের ভেতর থেকে ত্বক পর্যন্ত সুস্থ রাখে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো—অনেকে নিয়মিত বিট খান, কিন্তু তার খোসা ফেলে দেন।অথচ বিটের খোসায়ও আছে অমূল্য পুষ্টিগুণ, যা শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্যই উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত বিটের খোসা ফুটিয়ে সেই পানি খেলে নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়।
কিভাবে খাবেন বিটের খোসা
এক গ্লাস গরম পানিতে কয়েকটি বিটের খোসা দিন এবং পানির রং সম্পূর্ণ লাল হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। এরপর পানি ছেঁকে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানীয় পান করলে মাত্র ১৫ দিনেই শরীর ও ত্বকের দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
ত্বক ও শরীরের অসাধারণ উপকারিতা
এই পানীয় নিয়মিত পান করলে ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান হয়ে ওঠে, যেন বয়স কয়েক বছর কমে গেছে। পাশাপাশি এটি শরীরে রক্তের অভাব পূরণ করে, শক্তি বাড়ায়, হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং নারীদের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে।
বিটের খোসায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন ও নাইট্রেট শরীরের রক্তপ্রবাহ উন্নত করে, হজমে সাহায্য করে এবং ত্বক-চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়।
হৃদ্যন্ত্র ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
বিটের খোসায় থাকা নাইট্রেট শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে, যা রক্তনালিকে শিথিল করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। অন্যদিকে বেটালেইন নামের উপাদানটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা কোষের ক্ষতি রোধ করে ও বার্ধক্যের গতি কমিয়ে দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজমশক্তি বাড়ায়
বিটের খোসায় থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে ঠাণ্ডা, কাশি বা সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেট ভরা রাখে। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়—যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এ ছাড়া খোসায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও এটি উপকারী।
শরীর ডিটক্স ও প্রদাহ কমায়
বিটের খোসা লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। ফলে শরীর স্বাভাবিকভাবে ডিটক্স হয়। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ প্রদাহ ও ব্যথা কমাতেও কার্যকর।
চুল ও ত্বকের প্রাকৃতিক যত্নে
বিটের খোসা সিদ্ধ করে তার পানি চুলে ব্যবহার করলে চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আসে এবং খুশকি কমে যায়।
একই পানি মুখে টোনার হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার, কোমল ও দীপ্তিময় হয়।
