বাঙ্গি আমাদের দেশীয় ফলের মধ্যে একটি, যার পুষ্টির তুলনা হয় না। ফলটি স্বাদহীন হওয়ায় অনেকেই খেতে অপছন্দ করেন। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি স্বাদহীন হলেও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। বাঙ্গির পুরো অংশে রয়েছে পানি, যা এই গরমে দিনশেষে আমাদের শরীরের পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন রোধ করে শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
বাঙ্গির উপকারিতা
বাঙ্গিতে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বি১, বি২, ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, আঁশ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও জিংক। বাঙ্গি কিন্তু চর্বি বা কোলেস্টেরলমুক্ত। তাই যাঁরা ডায়েট করে থাকেন তাঁদের খাবারের তালিকায় বাঙ্গি রাখতে পারেন। বাঙ্গিতে থাকা খাদ্য উপাদানগুলো।
• ফলিক অ্যাসিড রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
• বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
• খাদ্য আঁশ খাদ্য হজম করতে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি খুব উপকারী ফল হিসেবে বিবেচিত।
• বাঙ্গিতে চিনির পরিমাণ রয়েছে খুবই কম, তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা নিঃসন্দেহে এ ফলটি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
• বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে বাঙ্গি। আমাদের ত্বকের কোষ যখন নষ্ট হয়ে যায়, তখন বাঙ্গির প্রোটিন কম্পাউন্ড ত্বককে সুন্দর করে তোলে।
• এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’। এ ভিটামিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ‘ইন্সনিটল’, যা আমাদের নতুন চুল গজাতে ও চুল পড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
• এই ফলের পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সক্ষম। বাঙ্গি মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করে শরীরের অবসাদ ভাব দূর করে থাকে। এ ছাড়া নিয়মিত বাঙ্গি খেলে খাবারে অরুচি, নিদ্রাহীনতা, আলসার ও অ্যাসিডিটি দূর হয়।
পুষ্টিতে পরিপূর্ণ এ ফলটিকে এখন থেকে এই গরমে, বিশেষ করে রোজার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেবেন না। একটু কৌশল অবলম্বন করলেই এই ফলটিকে সুস্বাদু করে খাওয়া যাবে। বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে বাঙ্গি মুখরোচক করে খাওয়া যায়। যেমন:
• সামান্য পরিমাণ বিটলবণ মিশিয়ে খান।
• ঝোলাগুড় বা যেকোনো গুড় মিশিয়ে বাঙ্গি খেতে সুস্বাদু।
• সরাসরি না খেয়ে বাঙ্গি দিয়ে সালাদ, ফালুদা, পায়েস, জুস, স্মুদি তৈরি করতে পারেন।
• কাঁচা বাঙ্গি সবজি হিসেবে খেতে পারেন।