English

27.1 C
Dhaka
রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

ঘাড় ব্যথায় মোটেই অবহেলা করবেন না

- Advertisements -

আধুনিক জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ওপর আমাদের নির্ভরতা অনেক বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিন শারীরিকভাবে বিকৃত ভঙ্গিতে বসে থাকার কারণে দেখা দিচ্ছে মেরুদ-ের নানা সমস্যা। এর মধ্যে ঘাড়ব্যথা অন্যতম। অনেক জটিল কারণেও ঘাড়ব্যথা হতে পারে। অনেকেই সামান্য ব্যথায় গুরুত্ব দেন না। যেসব পেশাজীবী সামনে ঝুঁকে কাজ করেন, তারা সহজেই ঘাড়ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যেসব কর্মজীবী ব্যক্তি ঘাড়ে, মাথায় বা কাঁধে ভারী জিনিস বহন করেন, তারাও ঘাড়ব্যথার প্রবণতা বেশি।

সমস্যার কারণ : প্রায় সব বয়সী মানুষের ঘাড়ব্যথা হতে পারে। এর সাধারণ কিছু কারণ হলো- আঘাতজনিত কারণে ঘাড়ের পেশি ও লিগামেন্টে হঠাৎ টান বা চাপ লাগলে। ভুল ভঙ্গিতে বসার কারণে ঘাড়ের হাড়ের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয়। ডিস্কজনিত সমস্যার কারণে ঘাড়ের মেরুদ-ে ডিস্কের ওপর অতিরিক্ত চাপ, ডিস্ক সরে যাওয়া, নার্ভে চাপ ইত্যাদি হতে পারে। বাতজনিত রোগ, বয়সজনিত পরিবর্তন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, কিছু শারীরবৃত্তীয় (ফিজিওলজিক্যাল) অবস্থার কারণে সমস্যা হতে পারে।

উপসর্গ : ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করা; ব্যথা কাঁধ, বুক, মাথার পেছনে, বাহু, কনুই কিংবা হাতে ছড়িয়ে পড়া; সকালে বা শেষ রাতে ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া; সামনের দিকে ঝুঁকে কাজ করতে কষ্ট হওয়া; হঠাৎ তীব্র ব্যথা অনুভব, ঘাড় ঘোরাতে সমস্যা হওয়া; ঘাড় একদিকে বেঁকে যাওয়া; ঘাড় থেকে হাতের আঙুল পর্যন্ত ঝিঝি বা অবশ ভাব; অনুভূতিশক্তি কমে যাওয়া; কিছু ক্ষেত্রে হাত-পায়ের দুর্বলতা, মাংসপেশি শুকিয়ে যাওয়া; মাথা ঘোরা ইত্যাদি।

যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন : যারা নিয়মিত ঘাড় সামনে ঝুঁকিয়ে অফিস বা বাড়িতে কাজ করেন; যারা অতিরিক্ত সময় কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ব্যবহার করেন; যারা ঘাড়ে, মাথায় বা কাঁধে ভারী জিনিস বহন করেন; যারা নিয়মিত ও দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করেন; যারা দীর্ঘদিন উঁচু বালিশ ব্যবহার করেন।

চিকিৎসার পদ্ধতির মধ্যে থাকতে পারে : ব্যথানাশক ওষুধ, পেশি শিথিলকারী ওষুধ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম, কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসা, জটিল ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার, সঠিক দেহভঙ্গিতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন না করা।

প্রতিরোধের উপায় : সঠিক দেহভঙ্গি ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে ঘাড়ব্যথা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। শক্ত ও সমান বিছানায় পাতলা তোশক এবং মাঝারি আকৃতির একটিমাত্র বালিশ ব্যবহার করুন। উঁচু বালিশ, একাধিক বালিশ বা খুব পাতলা বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রয়োজনে সার্ভাইক্যাল পিলো ব্যবহার করুন। ঘাড় সোজা রেখে চেয়ারে বসুন।

টিভি বা কম্পিউটার ব্যবহারকালে চোখ মনিটরের সমতলে রাখুন। শুয়ে মোবাইল ব্যবহার করবেন না। পড়াশোনা বা অফিসের কাজের সময় টেবিল-চেয়ারের উচ্চতার ভারসাম্য রাখুন। ঘাড়ে, মাথায় বা কাঁধে ভারী জিনিস বহন করা এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত ভ্রমণের সময় সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করুন। দীর্ঘ সময় বসে না থেকে মাঝে মাঝে হাঁটাহাঁটি করুন। প্রতিদিন কিছুক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকুন। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ ও শাকসবজি খাবারের তালিকায় রাখুন।

লেখক : সরকারি অধ্যাপক, চিফ কনসালট্যান্ট এবং

চেয়ারম্যান, রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার

৪০৭ ফিনিক্স টাওয়ার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ অ্যাভিনিউ,

তেজগাঁও, ঢাকা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/8pmk
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন