পাকা আমের মৌসুম এখন। পাকা আমকে শুধু স্বাদের জন্যই ফলের রাজা বলা হয়। কিন্তু আম আপনার ত্বকের যত্নেও দারুন উপকারী। পাকা আমে রয়েছে ভিটামিন-এ, সি, ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বিটা ক্যারোটিন, যা আপনার ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই চলুন জেনে নিন ত্বকের যত্নে পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে –
১. বয়সের ছাপ কমাতে সহায়ক
পাকা আমে থাকা ভিটামিন-সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, ফলে এটি বলিরেখা ও বয়সের ছাপ হ্রাস করে।
২. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
পাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমূহ ত্বকের ভেতর থেকে ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
৩. ত্বককে আর্দ্র রাখে
পাকা আমের প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ ও জলীয় উপাদান ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেটেড রাখে।
৪. প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর
আমের এনজাইম মৃত কোষ অপসারণ করে উজ্জ্বল ত্বক এনে দেয়।
৫. ত্বকের জ্বালাভাব কমায়
পাকা আমে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ত্বকের লালচে ভাব বা জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
এসব গুণ আপনি পেতে পারেন মৌসুমের পাকা আম খেয়ে। তবে ত্বকে সরাসরি লাগানোর জন্য পাকা আম দিয়ে তৈরি করা যায় কার্যকরী কিছু ফেসপ্যাক। জেনে নিন পাকা আম দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার পদ্ধতি-
১. আম, হলুদ ও মধুর ফেস মাস্ক
উপকরণ
পাকা আম ১টি
হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ
মধু ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে পাকা আমের খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ড করে পিউরে বানান। এই পিউরেতে মধু ও হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। মুখ ও গলায় এই পেস্ট লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই মাস্কটি ত্বককে উজ্জ্বল করে, দাগছোপ হ্রাস করে এবং ত্বকের রঙ সমান করতে সাহায্য করে।
২. আম ও দইয়ের এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব
উপকরণ
পাকা আম ১টি
টক দই ২ টেবিল চামচ
ওটস ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে পাকা আম খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে চটকে নিন। এরপর এতে দই ও ওটস মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে গোলাকার আকারে মালিশ করুন। এরপর ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এই স্ক্রাবটি মৃত কোষ দূর করে, লোমকূপ পরিষ্কার করে এবং ত্বককে মসৃণ ও সতেজ করে।
৩. আম ও অ্যালোভেরা জেল
উপকরণ
পাকা আম ১টি
টাটকা অ্যালোভেরা জেল ২ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে পাকা আম খোসা ছাড়িয়ে পিউরে করে নিন। এরপর পিউরেতে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে একটি স্নিগ্ধ জেল তৈরি করুন। এরপর মুখ ও গলায় এই জেল লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই জেল ত্বকের জ্বালা ও লালচে ভাব কমায় এবং গভীরভাবে আর্দ্রতা জোগায়।
সতর্কতা
পাকা আম সাধারণত বেশিরভাগ ত্বকে নিরাপদ হলেও যেকোনো নতুন উপাদান ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করা উচিত। মিশ্রণটি প্রথমে হাতে বা কানের পেছনে অল্প করে লাগিয়ে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। কোনো রকম অ্যালার্জি বা চুলকানি দেখা দিলে তা ব্যবহার করবেন না।