‘আইস থেরাপি’ বা নানা রকম ফলের নির্যাস দিয়ে তৈরি বরফ মুখে লাগিয়ে রূপচর্চার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখলে এমন অনেক টোটকাই চোখের সামনে পড়বে। কেউ বলছেন, নিমপাতা ফুটিয়ে বরফ করে মুখে মাখলেই ব্রণ কমবে, কেউ বলছেন অ্যালোভেরা দিয়ে বরফ জমিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
কিন্তু প্রকৃত অর্থে এমন কিছুই হয় না বলে জানিয়েছেন ত্বক রোগ বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, বরফ ব্যবহারে ব্রণ কমে, তৈলাক্ত ভাব উধাও হয়, এমন দাবির যৌক্তিকতা নেই। তবে যে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার হয়, সেগুলো ক্ষতিকর নয়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, বরফ ব্যবহারের উপকারিতা থাকলেও ব্যবহারবিধির ভুলই ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। ‘কোল্ড থেরাপি’-র তাৎক্ষণিক উপকারিতা অবশ্যই আছে, তবে সকলের জন্য তা সমানভাবে ভালো নয়।
উপকারিতা
বরফ দিলে সহজেই চোখমুখের ফোলাভাব কমে যায়। ক্লান্তির ছাপ দূর হয়। কারণ, ঠাণ্ডায় রক্তবাহক নালি সংকুচিত হয়ে যায়। বিশেষত ঘুম থেকে ওঠার পরে মুখে যে ফোলাভাব থাকে, তা কমাতে সাহায্য করে।
স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্র সংকুচিত করে বরফ। সে কারণে ত্বক দেখায় মসৃণ ও প্রাণবন্ত।
রোদের তাপে ত্বক লাল হওয়া যাওয়া, জ্বালা কমাতেও ‘কোল্ড থেরাপি’ সহায়ক। দ্রুত জ্বালাভাব কমাতে সহায়ক।
বরফ ব্যবহারের পর যখন ত্বক ঘরের তাপমাত্রায় আসে, রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়।
রক্ত সঞ্চালন ভালো হওয়ার ফলে মুখ উজ্জ্বল ও সুন্দর দেখায়।
কারা সতর্ক হবেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখে অনেকেই এমন সমস্ত কৌশল নিজস্ব রূপচর্চায় কাজে লাগান। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের ত্বক স্পর্শকাতর, ‘রোজাসিয়া’ বা ত্বক এমনিতেই লালচে ধরনের বা বিশেষ কোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মুখে বরফ ঘষা বিপজ্জনক হতে পারে। সরাসরি মুখে বরফ দেওয়া অনুচিত। এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক এবং যাদের বরফে অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য এই পন্থা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সঠিক কৌশল
বরফ মুখে মাখার আগে পরিষ্কার সুতির কাপড়ে মুড়ে নিতে হবে। তারপর সেটি সর্বোচ্চ ১-২ মিনিট হালকা করে বুলিয়ে নিতে হবে। চেপে মুখে ঘষলেও ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। বরফ থেরাপিতে কিছুটা উপকার হলেও তা কিন্তু ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে পারে না। বরফ মাখার পর তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে। তবে নিয়মিত এই পন্থা প্রয়োগ করা ঠিক নয় বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসক।