দিন দিন বাড়ছে থাইরয়েড। আর আধুনিক জীবনযাত্রায় থাইরয়েড সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত আয়োডিনযুক্ত খাবার রাখা জরুরি। আর এটি মূলত অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাড়ছে নানা শারীরিক সমস্যা।
বিশেষ করে থাইরয়েড ও স্থূলতার মতো রোগের প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে। শরীরে বিপাকের গতি ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে আয়োডিন নামের এক ক্ষুদ্র কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ভূমিকা অপরিসীম। আর সামান্য পরিবর্তন আনলেই আপনার শরীরের ভারসাম্য ও প্রাণশক্তি বজায় রাখা সম্ভব।
সি-উইড আয়োডিনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎস। কেল্প, নরি কিংবা ওয়াকামে জাতীয় শৈবালে প্রচুর আয়োডিন থাকে। সপ্তাহে এক–দুবার অল্প পরিমাণে খেলেই প্রয়োজন মিটে যায়। তবে অতিরিক্ত সি-উইড খাওয়ার ফলে বিপরীত প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিতভাবে খাওয়াই ভালো।
আর থাইরয়েড গ্রন্থি আয়োডিনের সাহায্যে এমন হরমোন তৈরি করে, যা শরীরের শক্তি উৎপাদন, তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন ও বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আয়োডিনের ঘাটতি হলে থাইরয়েড সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, যার ফলে দেখা দেয় হাইপোথাইরয়েডিজম, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ওজন বৃদ্ধির সমস্যা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে আয়োডিনের ঘাটতি মেটাবেন—
প্রয়োজন আয়োডিনযুক্ত লবণ
আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রয়োজন আয়োডিনযুক্ত লবণ। আর আপনার শরীরে আয়োডিনের চাহিদা মেটানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া। তবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যদি প্রাকৃতিক আয়োডিনের উৎস কম থাকে, তবে সামান্য পরিমাণে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করতে পারেন। আর এক চিমটে লবণ প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। আর এতে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে আপনার বড় ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে লবণ কমিয়ে দেন বা বাদ দেন। কিন্তু তা ঠিক নয়।
ডিম
আপনি প্রতিদিন একটি মাঝারি আকারের ডিম খেতে পারেন। কারণ ডিমের কুসুম আয়োডিনের ভালো উৎস। এতে থাকা প্রোটিন ও ভিটামিন ‘ডি’ শরীরের শক্তি ও বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সামুদ্রিক মাছ
প্রচুর পরিমাণে আয়োডিনযুক্ত খাবার পাওয়া যায় সামুদ্রিক মাছে। কারণ সামুদ্রিক মাছ কড, টুনা, চিংড়ি, ইলিশ ও স্যামন মাছে রয়েছে প্রচুর আয়োডিন। এর পাশাপাশি এসব মাছে থাকা ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।
দুগ্ধজাত পণ্য
দুগ্ধজাত পণ্য দুধ, দই ও চিজ আয়োডিনের অন্যতম ভালো উৎস। গরুর খাদ্য ও দুগ্ধ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত আয়োডিনের কারণে এ খাদ্যগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিন থাকে। স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে লো-ফ্যাট বা অর্গানিক দুধ বেছে নিতে পারেন।
