নবজাতকের শরীরে তেল মালিশের রেওয়াজ বেশ পুরোনো। কিন্তু এখনকার চিকিৎসকেরা তেল মালিশের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তেল মালিশ না করার পরামর্শ দেন। এর বদলে শিশুর শরীরে ময়েশ্চারাইজার মাখানোর পরামর্শ দেন।
তেল মালিশের সময় কী কী সাবধানতা জরুরি?
তেল মালিশের সময় কী কী ভুল করা যাবে না, সেই নিয়ে একটি ভিডিয়ো বানিয়েছেন ভারতীয় চিকিৎসক পবন মান্দাবিয়া। চিকিৎসক বলেন, ‘‘মালিশের শময় শিশুর কানে, নাকে, অম্বালিক্যাল কর্ডে আলাদা করে তেল না দেওয়াই ভালো। এতে ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। মালিশের সময় শিশুকে হাওয়ায় ভাসানোর মতো ভুল ভুলেও করা যাবে না। এতে ঘাড়ে, মাথায় এবং কোমরে আঘাত লাগার ভয় থাকে। সদ্যোজাত শিশুর মাথায় মালিশের সময় যে গর্ত মতো অংশ থাকে, সেখানে বেশি পরিমাণে তেল দিয়ে রাখবেন না। এতে গর্ত মোটেও ভরে যায় না। মোটামুটি দেড় বছর বয়সে এই গর্ত নিজে থেকেই ভরে যাবে। মালিশের সময় আঙুল দিয়ে নাকের উপরিভাগ তীক্ষ্ণ করার ভুল করবেন না, এতে নসিকাপথের ক্ষতি হয়ে পারে, ভবিষ্যতে শিশুর শ্বাসের সমস্যাও শুরু হতে পারে।’’
ভারতীয় আরেক শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষও তেল মালিশের বিষয় অভিভাবকদের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘শিশুকে মালিশ করতে হবে আলতো হাতে। এমন অনেক শিশুকে আমি দেখেছি, যাদের মালিশ করার সময় হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়ে গিয়েছে। ছোটদের হাড় খুব নরম হয়, তাই সাবধান! খুব ধীরে ধীরে ওদের মালিশ করতে হবে।’’
সরিষার তেল নাকি অলিভ অয়েল
সদ্যোজাত শিশুদের তেল মালিশের জন্য সরিষার তেল ব্যবহার না করাই ভালো বলে মনে করেন ভারতীয় চিকিৎসক সন্দীপন ধর। তিনি বলেন, ‘‘সরিষার তেল দিয়ে মালিশের সময় অনেক সময় তেল নাকে ঢুকে যায়। সরিষার তেলের ঝাঁজে শিশুদের কষ্ট ও অস্বস্তি হতে পারে। তা ছাড়া এখন নির্ভেজাল সরিষার তেল প্রমাণ করার জন্য তেল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি বিভিন্ন ধরনের ঝাঁঝালো উপাদান ব্যবহার করে। সেই উপাদানগুলির জন্য শিশুর ত্বক জ্বালা করে, র্যা শও বেরোয়। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেলে অ্যালিল আইসো থায়োসায়ানাইট যৌগ থাকে, এই যৌগটি শিশুর ত্বকের জন্য মোটেও ভালো নয়। সরিষার তেলের বদলে শিশুর তেল মালিশের জন্য সবচেয়ে ভালো বিকল্প হতে পারে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল।’’
