ডা. নাফিসা আবেদীন: পায়ে জ্বালাপোড়া করা বা বার্নিং ফিট সিনড্রোম একটি পরিচিত সমস্যা, যেখানে পায়ের তলা, গোড়ালি, উপরিভাগ এবং লেগ-এ জ্বালা ও ব্যথা হতে পারে। পুরুষের তুলনায় নারীরা এ রোগে বেশি ভোগেন। জ্বালা ও ব্যথা সাধারণত রাতে বেড়ে যায় এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর উপসর্গ থাকে না।
পায়ে জ্বালাপোড়ার প্রধান কারণ
পায়ে জ্বালাপোড়ার মূল কারণ স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা বা স্নায়ুর ক্ষতি। এ সমস্যার জন্য দায়ী কয়েকটি কারণ:
lভিটামিন-বির অভাব: থায়ামিন (B1), পাইরিডক্সিন (B6), সায়ানোকোবালামিন (B12), নিকোটানিক এসিড ও রাইবোফ্ল্যাভিনের অভাব।
lবিপাকীয় ও হরমোনের সমস্যা: ডায়াবেটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হাইপোথাইরয়েডিজম।
lঅন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থা: কিডনি ফেইলিউর (হিমোডায়ালাইসিস রোগী), যকৃৎ (লিভার) ফাংশন খারাপ, কেমোথেরাপি গ্রহণ।
lজীবনযাত্রার কারণ: দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিরিক্ত ঘাম (যা পায়ে হয়), ইলফিটিং (ত্রুটিপূর্ণ) বা
আঁটসাঁট জুতা পরিধান এবং অ্যালার্জিজনিত মোজা ব্যবহার।
lস্নায়ুর সমস্যা: স্নায়ু ইনজুরি, অবরুদ্ধ ও সংকোচন।
করণীয় ও চিকিৎসা কৌশল
পায়ে জ্বালাপোড়া থেকে মুক্ত থাকার জন্য চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকা ভালো:
lজুতা ও মোজা: সঠিক মাপের খোলা ও আরামদায়ক জুতা এবং আরামদায়ক সুতার মোজা ব্যবহার করা। পায়ের আর্চ সাপোর্ট, ইনসোল ও হিল প্যাড ব্যবহারে উপসর্গ লাঘব হতে পারে।
lশারীরিক ব্যবস্থা: পায়ের পেশির ব্যায়াম এবং ঠান্ডা পানির (বরফ নয়) সেঁক উপসর্গ কমাতে উপকারী।
lভিটামিন ও খাদ্য: রোগ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সেবন করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ইনজেকশন নেওয়া।
lরোগ নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত রাখা, মদ্যপান ও ধূমপান থেকে বিরত থাকা।
lস্নায়ুর চিকিৎসা: স্নায়ু ইনজুরি বা সংকোচনের ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
