মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মানুষের শরীর ও মনের কোন ধরনের পরিবর্তন হয়, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সবার মনে। মৃত্যুর আগমুহূর্তে মানুষের মস্তিষ্কের নানা পরিবর্তন নিয়ে জানতে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছানোর অভিজ্ঞতা বা নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স (এনডিই) কেমন হয়, তা জানিয়েছেন। মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছানো ৪৮ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর ঠিক আগে তারা কী দেখেছিলেন, তা জানার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা একেকজনের একেক রকম হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশনের বিজ্ঞানী লার্নার জানান, নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্সের ধরন আমাদের দৃশ্যমান ক্ষেত্রকে পরিবর্তন করে। যখন মস্তিষ্কের কাজ বন্ধ হতে শুরু করে তখন এসব দৃশ্য সামনে আসে। সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের কারণে সেই সময় অনেকেই হ্যালুসিনেশনের মধ্যে থাকেন।
ফ্রান্স লার্নার আরও জানান, সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা হ্যালুসিনেশনের ভিত্তি তৈরি করে। নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স অভিজ্ঞতাকে চারটি স্বতন্ত্র জ্যামিতিক ভাগে ভাগ করা যায়। যদিও অংশগ্রহণকারীদের দর্শনে ভিন্নতা দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা অনুভূত স্থান, স্ব-অবস্থান ও অনুভূত স্থানিক অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে একটি কাঠামো তৈরি করেছেন।
গবেষণা দেখা গেছে, মৃত্যুর আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে পেরিফেরাল দৃষ্টি সেই সময় কার্যত নষ্ট হয়ে যায় বলে টানেল দৃষ্টি তৈরি হয়। সেই সময় এ-আকৃতির কোন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা। আবার বি-আকৃতি ও সি-আকৃতির অভিজ্ঞতা পেয়েছেন অনেকেই। সম্ভবত তখন দৃশ্যমান ক্ষেত্রের অর্ধেক সাময়িকভাবে হারিয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা মনে হয়। কেউ কেউ সি৫-আকৃতির কাঠামো বা সম্পূর্ণ ৩৬০-ডিগ্রি উপবৃত্তাকার কাঠামো দেখেন তারা। সাধারণত এনডিইর প্রক্রিয়া যত সামনে এগোতে থাকে, ততই মানুষের অভিজ্ঞতা এ আকৃতি থেকে সি৫-আকৃতির দিকে পরিবর্তিত হয়।
