গত কয়েক বছরে লিপস্টিকের বেলায় সবচেয়ে বড় যে বদল চোখে পড়ছে তা হলো এর রঙের বিচিত্রতা। একসময় লিপস্টিকের রং বলতে কেবল টকটকে লাল, বড়জোর মেরুন- এই-ই বুঝত মেয়েরা।
হালের তরুণীরা নিজেরাই একেকজন স্টাইল ক্রিয়েটর। তারা ত্বকের রঙে মিলিয়ে যেমন পরছেন বর্ণহীন ন্যুড, আবার ইচ্ছা হলেই ঠোঁটে বোলাচ্ছেন একেবারে কন্ট্রাস্ট, উজ্জ্বল কোনো রঙের লিপস্টিক।
এখন তো লাল, মেরুনের বাইরেও বেগুনি, গোলাপি, পিচ, হট পিংক, মেজেন্টা, কমলা এমনতরো কত রঙের দেখা মিলছে তরুণীদের ঠোঁটে। লিপস্টিক লাগালেই হয় না কিন্তু! মাথায় রাখতে হয় ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ও
শুষ্ক বা সাধারণ ঠোঁটের ক্ষেত্রে প্রথমে ভেসলিন লাগিয়ে খানিকক্ষণ পর টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। এরপর লিপস্টিক লাগাতে হবে। যে লিপস্টিকই লাগান না কেন, সরাসরি ঠোঁটের ওপর না লাগিয়ে লিপব্রাশ দিয়ে আলতোভাবে লাগানো উচিত। ঠোঁট থেকে লিপস্টিক ওঠানোর সময় ভেজা নরম সুতি কাপড় অথবা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে বয়স ও স্থানকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
* কর্মক্ষেত্রে হালকা রঙের লিপস্টিক দেওয়া ভালো।
* পার্টিতে গাঢ় রঙের লিপস্টিক সাজে জাঁকালো ভাব এনে দেয়।
* মোটা ঠোঁট আকর্ষণীয় করে তুলতে গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করে হালকা শেডের ব্যবহার করুন।
* ঠোঁটের স্বাভাবিক আকার অনুযায়ী ওপরের ঠোঁটের মাঝখান থেকে বাইরের দিকে আউটলাইন টানুন। ঠোঁটের মাঝখান থেকে লিপস্টিক লাগানো শুরু করুন। এবার বর্ডার লাইনের সঙ্গে লিপস্টিক ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
* লিপ গ্লস এড়িয়ে চলুন। তার বদলে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করুন। ভালোভাবে ছড়িয়ে দিতে ব্যবহার করুন লিপ ব্রাশ।
* লিপলাইনারের সাহায্যে ঠোঁটের আকৃতি ঠিক করে নিন। সরু ঠোঁট একটু মোটা করতে পারেন লিপলাইনারের সাহায্যে। চারদিকে বর্ডার এঁকে ঠোঁট সাজিয়ে তুলুন পছন্দের রঙে। লিপলাইনার দিয়ে পুরো লিপস্টিক পরতে পারেন। অথবা লাগাতে পারেন অন্য রঙের লিপস্টিক।
* সরু ঠোঁট যাদের তারা লাল রঙের লিপস্টিক পরতে পারেন। লাল রঙে ঠোঁট উজ্জ্বল দেখাবে।
* ঠোঁট সরু হলে তুলি ব্যবহার করা উচিত। এতে সহজে ঠোঁটের সাজ ঘেঁটে যায় না। সরাসরি লিপস্টিক দিলে তা বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
* ঠোঁট সব সময় ময়েশ্চারাইজ রাখতে হবে। ঠোঁট শুষ্ক থাকলে লিপস্টিক ঠোঁটে বসতে চায় না সহজে। তাই নিয়মিত ঠোঁটে লিপবাম ব্যবহার করুন।
* মেকআপের সময় আগে যেমন ত্বককে প্রাইম করে নিতে হয়, ঠিক তেমনি ঠোঁটে লিপস্টিক মাখার আগে ঠোঁট প্রাইম করে নিন। লিপস্টিক দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে ঠোঁটে লিপজেল লাগিয়ে রাখুন।
* লিপস্টিক লাগানোর আগে মুখের পাশাপাশি ঠোঁটেও ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন হালকা করে। এতে লিপস্টিক অনেকক্ষণ ঠোঁটে বসে থাকবে।
* ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। তবে ম্যাট লিপস্টিক অনেক সময় ড্রাই হয়ে যায়। তাই ব্যবহারের আগে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ করে নিলে লিপস্টিক অনেকক্ষণ ঠোঁটে থাকবে।
* লিপস্টিক লাগানোর পর টিস্যু পেপার দিয়ে ঠোঁটের ওপর চেপে ধরুন। এতে বাড়তি রং উঠে যাবে। এর ওপর আবার লিপস্টিক লাগিয়ে নিন, এতে লিপস্টিক সহজে নষ্ট হবে না।
* মাঝে মাঝে ঠোঁটে স্ক্রাবিং করুন। এতে ঠোঁট নরম ও কোমল থাকবে। ঠোঁটে লিপস্টিক খুব সুন্দর বসবে। স্ক্রাবিংয়ের পর লিপজেল লাগাতে ভুলবেন না।
লিপস্টিক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
* লিপস্টিক ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়ায়। তবে ঠিকঠাক ব্যবহার না জানলে ঠোঁট কালো হওয়া থেকে শুরু করে অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে।
* ঠোঁট ভালো রাখতে অবশ্যই গুণগত মান যাচাই করে ভালো মানের লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে।
* লিপস্টিক ব্যবহারের পর রুমাল দিয়ে ঘষে মুছবেন না। এতে ঠোঁটের সূক্ষ্ম চামড়া ছিঁড়তে পারে।
* লিপস্টিকের রং হালকা করতে চাইলে লিপস্টিকের ওপর সামান্য ভেসলিন ব্যবহার করুন।
* লিপস্টিকের মেয়াদ আছে কি না দেখে নিন। মেয়াদহীন লিপস্টিক দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।