English

31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
- Advertisement -

যে যত্নে দূর হবে চোখের নিচের ফাইন লাইনস ও রিংকেল

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত আমাদের ত্বক নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে আমাদের ত্বক হারায় তার দৃঢ়তা ও জেল্লা। আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সবার মাঝে একটি সাধারণ সমস্যা দেখা দেয়। সেই সমস্যাটি হলো–চোখের নিচে ভাঁজ পড়ে যাওয়া কিংবা কুঁচকে যাওয়া, একেই ফাইন লাইনস ও রিংকেল বলে। আমাদের প্রতিদিনকার জীবনাচরণ, কম ঘুমানো, স্ট্রেস, ব্যাস্ততা,পরিবেশদূষণ, সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি, বংশগত কারণ ইত্যাদি কারণগুলো চোখের নিচের কালো দাগ হওয়ার জন্য দায়ী।

এটা আমাদেরকে জানান দেয় যে খাদ্যাভাস, বয়স বা জীবনযাত্রায় হচ্ছে অনিয়ম। এজিং সাইনগুলো সাধারনত সবচেয়ে প্রথমে চোখের নিচেই দৃশ্যমান হয়। কারন আমাদের চোখের নিচে প্রিঅরবিটাল হলো নামক অংশের চামড়াতে থাকা রক্তের শিরাগুলো তুলনামূলক পাতলা হয়। আগে থেকেই এ ব্যাপারে সচতন থাকতে হবে, সময় করে যত্ন নিতে হবে চোখের।

যে কারণে হয় ফাইন লাইনস ও রিংকেল:

রিংকেল এবং ফাইন লাইন হবার পেছনে এমন কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে, যা আমরা চাইলেই কন্ট্রোল করতে পারি না। যেমন-

বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকের ইলাস্টিসিটি এবং নমনীয়তা কমতে থাকে। ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে ফ্যাট কিংবা তেল উৎপাদন কমে যায়,যা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। যে কারণে ত্বকের চামড়া ঝুলে যেয়ে ত্বকে ফাইন লাইন অর্থাৎ বলিরেখা এবং রিংকেলের সৃষ্টি করে।

সূর্যের আলো কিংবা আলট্রা ভায়োলেটের প্রভাব: ত্বকে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্নির প্রভাবে এজিং শুরু হয়, যা রিংকেল হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ। ইউভি রশ্নির সংস্পর্শে আমাদের ত্বকের গভীরের কানেক্টিভ টিস্যু- কোলাজেন এবং ইলাস্টিন ফাইবারকে নিস্তেজ করে দেয়। যার কারণে ত্বকে ভাজ অর্থাৎ রিংকেল দেখা যায়।

এ ছাড়াও ধূমপান, খাদ্যাভ্যাস এবং আমাদের প্রতিদিনকার বিভিন্ন ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন (যেমন- চোখ কুঁচকে রাখা, কিংবা হাসার সময় চোখ ছোট করে ফেলা) ইত্যাদিও এই রিংকেল বা ফাইন লাইনের জন্য দায়ী।

চোখের নিচে রিংকেল কিংবা ফাইন লাইনসের প্রতিকারের জন্য কিছু টিপস-

সানস্ক্রিন: সূর্যের আলো থেকে যতটা পারা যায় স্কিনকে সুরক্ষা দিতে হবে। সরাসরি সূর্যের আলো পড়ার সম্ভাবনা থাকলে সানগ্লাস, ছাতা এবং লং-স্লিভ অর্থাৎ লম্বা হাতাওয়ালা জামা পরতে হবে। আর এক্ষেত্রে স্কিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে- সানস্ক্রিন। বাসা থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন দিতে হবে। সানপ্রটেকশন যুক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে, যাতে ন্যূনতম এসপিএফ ৩০ থাকে। বয়স ভেদে সানস্ক্রিনের এসপিএফের মাত্রা ১৫ থেকে ৫০ পর্যন্ত হতে পারে। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে তা ক্লিন করার জন্য অবশ্যই ডাবল ক্লেনজিং করতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার: স্কিন ড্রাই কিংবা শুস্ক থাকলে সহজেই ফাইন লাইনস এবং রিংকেল দেখা দেয়। তাই শুষ্কতা থেকে বাঁচতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কয়েক সপ্তাহ ব্যবহারেই আপনি ত্বকে পরিবর্তন লক্ষণ করতে পারবেন।

আই-ক্রিম: আমাদের চোখের নিচের ত্বক ফেইসের অন্যান্য অংশের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি সংবেদনশীল। তাই এর পরিচর্যাতেও দরকার এক্সট্রা কেয়ার। ত্বকের ধরণ ও বয়স ভেদে মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের আই-ক্রিম পাওয়া যায়। রিংকেল ও ফাইনলাইনসের মতো সমস্যা এড়াতে আই-ক্রিম খুবই কার্যকরী।

হেলদি ডায়েট: আমমাদের ত্বকের জন্য কিছু কিছু ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৫ সহ ইত্যাদি। এই প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলো আমাদের ত্বকের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল থেকে আমরা এ ভিটামিনগুলো পেয়ে থাকি।

জেনে নিন রিংকেল দূর করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক প্যাক-

একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে ত্বকের এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে থাকে। তাই আমাদের উচিত স্কিনকেয়ারের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং ত্বক অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট স্কিন-কেয়ার রুটিন ফলো করা। তাহলে এই সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। রিংকেল বা ফাইন লাইনস রোধে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তৈরি হোম রেমেডির কথা বলা যাক। আপনি সহজেই বাসায় বসে বানিয়ে নিতে পারবেন কার্যকরী এই প্যাকগুলো।

শসা এবং দইয়ের প্যাক: চোখের সৌন্দর্য চর্চায় শসা প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। শসায় এমন উপাদান আছে, যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি কে ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে টানটান রাখে। যার ফলে রিংকেল এবং ফাইনলাইনসের মতো সমস্যাগুলো এড়ানো যায়।

এই প্যাকটি বানানোর জন্য শসা ভালোভাবে ব্লেন্ড করে পরিমাণ মতো টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর চোখের নিচে ১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার প্যাকটি ব্যবহার করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।আপনি চাইলে দিনের সকল কাজ শেষে ২ টুকরো শসা চোখের উপরে দিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেন। এতে আপনি বেশ রিফ্রেশ ফিল করবেন এবং একই সাথে ত্বকের যত্নও হবে।

কফি বিন প্যাক: অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কফি এবং কোকোয়া পাউডার রিংকেল এবং ফাইনলাইনস কমাতে সাহায্য করে। কোকোয়া পাউডার এবং মধু একসাথে মিশিয়ে আপনি সহজেই আপনি প্যাকটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন। চোখের নিচে এবং পুরো ত্বকে প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলে ধুয়ে নিতে পারেন।

নারকেল তেল এবং হলুদের প্যাক: নারকেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-ই, যা ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এক টেবিল চামচ নারকেল তেলে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে সহজেই প্যাকটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন আপনি। নারকেল তেলের সঙ্গে আমন্ড ওয়েল এবং ক্যামোমাইল ওয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।

অলিভ অয়েল ম্যাসাজ: চোখের নিচে ফাইন লাইন কিংবা রিংকেলের জন্য অলিভ অয়েল ম্যাসাজ বরাবরই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। ভিটামিন ই, কে এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

অ্যালোভেরা ফেইস প্যাক: ত্বকের পরিচর্যায় অ্যালোভেরা খুবই উপকারী। অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ভিটা ক্যারোটিন। যা আমাদের ত্বককে সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে।

পেঁপে এবং মধুর ফেইস প্যাক: চোখের নিচের রিংকেল, ফাইনলাইনস এবং আইব্যাগের জন্য এই প্যাকটি খুবই কার্যকরী। ত্বকের সুরক্ষা এবং ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে মধুও ব্যবহার হয়ে থাকে। পরিমাণ মত পেঁপে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে কয়েক ফোঁটা মধু মেশাতে হবে। সাথে কিছুটা টকদই মিশিয়ে লাগিয়ে নিন, ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে কয়েকদিন ব্যবহারেই চোখের নিচের রিংকেলস কমতে দেখা যাবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন