তবে এ ঠিক রান্নার সময়ে নয়, তার আগের ধাপের ওপর নির্ভরশীল।
রসুনের কোয়ার ভেতরে এমন এক ধরনের উপাদান থাকে, যা তখনই সক্রিয় হয়, যখন কোষ ভেঙে যায়। আর তা হলো অ্যালিসিন। রসুনের অনন্য স্বাদ আসে এই অ্যালিসিন নামক যৌগ থেকেই।
সালফারযুক্ত যৌগটি রসুনের সুগন্ধ ও তীব্র স্বাদের কারণ।
রসুন কাটা, থেঁতো করা বা বাটা হলে রসুন থেকে অ্যালিনেজ নামে এক এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই এনজাইম অ্যালিসিন তৈরি করার জন্য অন্য একটি যৌগ অ্যালিনের সঙ্গে মিলিত হয়। রসুনকে নিয়ে যত বেশি কাটাছেঁড়া করা হবে, তত বেশি অ্যালিসিন নিঃসৃত হবে।
ফলে আরো স্পষ্ট স্বাদ তৈরি হবে। তাই আপনি রসুনকে ঠিক কিভাবে ব্যবহার করছেন, সেটির ওপর নির্ভর করছে খাওয়ার সময়ে কোন স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে।
আর তাই রান্নার ধরন অনুযায়ী রসুনের স্বাদ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে কাটার ধরনগুলো জেনে নেওয়া জরুরি।
রসুন কাটার ধরন অনুযায়ী স্বাদের পার্থক্য
আস্ত কোয়া ব্যবহার করলে
রসুন যদি একেবারে আস্ত অবস্থায় রান্নায় দেওয়া হয়, অর্থাৎ না কেটে, না থেঁতো করে, তাহলে তার ঝাঁজ প্রায় থাকেই না। রান্নায় শুধু হালকা সুবাস ও মৃদু মিষ্টি স্বাদ যোগ করে।
ফালি করে কাটলে
রসুনের কোয়া পাতলা করে ফালি করলে তার স্বাদ খানিকটা ঝাঁঝালো হয়, তবে তা বেশ মৃদু। এটি এমন রান্নায় ভালো মানায়, যেখানে অতিরিক্ত ঝাঁজের প্রয়োজন নেই।
কুচি করে কাটলে
ছোট ছোট কুচি করলে রসুনের কোষ বেশি ভাঙে, ফলে ঝাঁজও অনেকখানি বেড়ে যায়। এমনভাবে কাটা রসুন মসলাদার তরকারি, ভাজাপোড়া বা কষানো রান্নায় ব্যবহার করলে চমৎকার স্বাদ আসে।
থেঁতো করলে বা বেটে নিলে
রসুন থেঁতো করলে বা বেটে নিলে সবচেয়ে বেশি ঝাঁজ ও তীব্র গন্ধ পাওয়া যায়। কারণ এতে রসুনের কোশ পুরোপুরি ভেঙে যায়। এভাবে ব্যবহার করা রসুন ঝাল, মসলাদার রান্নায় সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।
একই রসুন, কিন্তু কাটার ধরন অনুযায়ী তার স্বাদ একেবারেই ভিন্ন। রান্না কেবল উপকরণ নয়, উপস্থাপনও। রসুনের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় না।