কারো পছন্দ মুরগির ডিম, কারো আবার হাঁসের ডিম। অনেকেই হাঁসের ডিমের আঁশটে গন্ধের কারণে তা খেতে চান না, আবার কারো মুরগির ডিমেই অরুচি। জনপ্রিয়তার দিক থেকে দুইটিই সমান, কিন্তু স্বাস্থ্য সচেতনরা প্রায়ই দ্বিধায় পড়েন—কোন ডিমটা খাবেন? হাঁসের ডিমে কি বেশি পুষ্টি, নাকি মুরগির ডিমই বেশি স্বাস্থ্যকর?
পুষ্টিগুণের তুলনা
১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে থাকে প্রায় ১৮৫ কিলোক্যালরি শক্তি, আর একই পরিমাণ মুরগির ডিমে থাকে প্রায় ১৪৯ কিলোক্যালরি। প্রোটিন দুই ধরনের ডিমেই থাকে, তবে হাঁসের ডিমে পরিমাণ সামান্য বেশি।
দু’টির মধ্যেই সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, কপার, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের উপস্থিতি রয়েছে। শুধু আকারে বড় হওয়ার কারণে হাঁসের ডিমে এসব উপাদানের পরিমাণ একটু বেশি থাকে।
দুই ধরনের ডিমেই থিয়ামিন, নিয়াসিন, রাইবোফ্লাভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, ভিটামিন বি৬, ডি, ই, এ, বি১২ এবং রেটিনল রয়েছে। তবে হাঁসের ডিমে ভিটামিনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।
হাঁসের ডিমে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটও বেশি, পাশাপাশি কোলেস্টেরল এবং সোডিয়ামের মাত্রাও উঁচু।
হার্টের রোগীদের জন্য কোনটি?
তা হলে কি হৃদ্রোগীদের একেবারেই ডিম খাওয়া উচিত নয়? বিশেষজ্ঞদের মতে, এমনটা নয়। যাদের হার্ট অ্যাটাক বা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়েছে, কিংবা যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারাও সপ্তাহে তিনটি পর্যন্ত মুরগির ডিম খেতে পারেন। ডিমের সাদা অংশ প্রতিদিন খেলেও ক্ষতি নেই।
হাঁসের ডিম অবশ্য তুলনামূলক ভারী, তাই সপ্তাহে এক-দু’দিনের বেশি না খাওয়াই ভালো।
কোলেস্টেরল প্রসঙ্গ
হাঁসের ডিমে কোলেস্টেরল বেশি হলেও, অধিকাংশ গবেষণা বলছে, সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় না। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ডিম (খারাপ কোলেস্টেরল) বাড়ালেও, (ভালো কোলেস্টেরল) বাড়ায় যা শরীরের জন্য উপকারী।
তবে ডায়াবেটিস বা পরিবারের মধ্যে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে হাঁসের ডিম সবার জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে। এ ছাড়া ডিমের কুসুমে থাকা কোলিন অন্ত্রে ভেঙে (টিএমও) নামের একটি যৌগে রূপান্তরিত হয়, যা কিছু গবেষণায় হৃদ্রোগের সম্ভাবনা বাড়ানোর সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়।
যদিও (টিএমও) আদৌ ঝুঁকির কারণ, নাকি শুধু একটি সূচক তা এখনো পরিষ্কার নয়। উল্লেখযোগ্য যে, মাছেও স্বাভাবিকভাবে (টিএমও) বেশি থাকে, তবুও মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কারণ তা হৃদ্স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
