ঈদুল আজহার খুব বেশি দেরি নেই। আর কুরবানির ঈদ মানেই বিভিন্ন রকমের পশু কুরবানি দেওয়া। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি কুরবানি হয় গরু। যার কারণে সকলের ঘরেই কম বেশি গরুর মাংস রান্না হয়।
তবে হৃদরোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে অনেকেই চেষ্টা করেন না খাওয়ার বা কম খাওয়ার। তবে নিয়ম মেনে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও খেতে পারেন গরুর মাংস।
গরু মাংসে অধিক চর্বি থাকে। তাই চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ শরীরে হঠাৎ চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেলে, রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
হার্ট ও উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ফারুক হোসেইন। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
হার্টের রোগীদের কী পরিমাণ খাওয়া উচিত:
দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো- ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। অর্থাৎ আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান টুকরাতে এই পরিমাণ মাংস পাবেন। আপনি যদি ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খান, তাহলে এটা থেকে আপনার দৈনিক ক্যালরির চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ আসবে। ৩ আউন্স মাংসে আছ ২০০ ক্যালরি এবং দৈনিক ক্যালরির চাহিদা ২০০০ ক্যালরি।
মাংস রান্না আগে চর্বি ছাড়িয়ে নিন:
মাংস রান্না করার আগে মাংস থেকে অতিরিক্ত চর্বি ছাড়িয়ে নিন। শুধু মাংসের টুকরা রান্না করতে পারেন। এই রান্না করা মাংস উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও এলার্জি রোগীরা খেতে পারবেন।
সিনার ও পাজরের মাংস:
গরুর শরীরের সিনা ও পাজরের মাংসে কোনো চর্বি থাকে না। তাই উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও এলার্জি রোগীরা সিনা ও পাজরের মাংস খেতে পারবেন। এই মাংস খেলে তেমন ক্ষতির শঙ্কা নেই।
টানা কতদিন খাবেন:
আপনি গরুর মাংস খেতে পারলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য খেতে পারবেন না। ঈদের দিন থেকে শুরু করে পর পর তিন দিন খেতে পারেন।
দিনে দুই বেলার বেশি নয়:
মাংস অবশ্যই খাওয়া যাবে, তবে দিনে দুই বেলার বেশি নয়। আর মাংসের পরিমাণ হবে ছোট হলে তিন টুকরা আর বড় হলে দুই টুকরা।
গরুর মাংসের শিক কাবাব, চাপ:
শিক কাবাব কমবেশি সবারই বেশ পছন্দ, বিশেষ করে গরুর মাংসের শিক কাবাব। আর উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও এলার্জির রোগীরা গরুর মাংসের শিক কাবাব ও চাপ খেতে পারেন। কারণ এই খাবারগুলোতে চর্বি থাকে না।
অ্যান্টি হিসটাসিন:
যাদের অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা আছে তারাও মাংস খেতে পারবেন। তবে খাওয়ার আগে একটি অ্যান্টি হিসটাসিন খেয়ে নিতে পারেন। আর উচ্চ রক্তচাপের হার্টের রোগীরা শরীরের কোলেস্টোরল কমায় এমন ওষুধ খেতে পারেন।