English

26.8 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ১৬, ২০২৫
- Advertisement -

অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার কি মানসিক রোগে পরিণত হচ্ছে?

- Advertisements -
আজকের দিনে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ হোক বা বিনোদন, কেনাকাটা হোক কিংবা ব্যাংকিং—সব কিছুতেই মোবাইল নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট যুক্ত হওয়ার পর থেকে এই নির্ভরতা আরো জোরদার হয়েছে। তবে এর সঠিক ব্যবহার যেমন আমাদের জীবন সহজ করে তুলেছে, তেমনি অতিরিক্ত ব্যবহারে তৈরি হচ্ছে নানা সমস্যা—এর মধ্যে অন্যতম হলো নোমোফোবিয়া।

নোমোফোবিয়া কী?
নোমোফোবিয়া শব্দটি এসেছে ‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’ থেকে। অর্থাৎ, মোবাইল ফোন না থাকলে বা ব্যবহার করতে না পারলে যে ভয় বা দুশ্চিন্তা তৈরি হয়, সেটিই এই সমস্যার মূল লক্ষণ। ফোন হারিয়ে যাওয়া, চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া বা নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে যারা আতঙ্কিত বোধ করেন, তারা নোমোফোবিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।

নোমোফোবিয়ার লক্ষণ কী কী?
এই সমস্যার দুটি প্রধান লক্ষণ রয়েছে—মানসিক ও শারীরিক।

মানসিক লক্ষণ:
মোবাইল হাতছাড়া হলে ভীষণ দুশ্চিন্তা বা আতঙ্ক, ফোন চোখের আড়াল হলেই অস্থিরতা, কিছুক্ষণ ফোন না ব্যবহার করলেই হতাশা, মুড খারাপ হয়ে যাওয়া।

শারীরিক লক্ষণ:
কাঁপুনি, ঘাম, শ্বাসকষ্ট, কোনো কারণ ছাড়াই মাথাব্যথা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপে শরীর ভেঙে পড়া।

কেন হয় এই সমস্যা?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মোবাইলের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা থেকেই এই আসক্তির জন্ম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গেম, বিনোদন—সবকিছু হাতের মুঠোয় পাওয়ার ফলে মোবাইলকে বাদ দিয়ে জীবন কল্পনাই করা কঠিন হয়ে গেছে।মস্তিষ্কের ‘ডোপামিন’ নামক হরমোন এই আসক্তি আরো বাড়িয়ে তোলে।

পরিসংখ্যান কী বলছে?
বিশ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭০০ কোটির বেশি। আমেরিকার ৬৬% মোবাইল ব্যবহারকারী স্বীকার করেছেন, তাদের মধ্যে নোমোফোবিয়ার লক্ষণ রয়েছে। ৫০% মানুষ মোবাইল বাসায় রেখে গেলে অস্বস্তি অনুভব করেন। ৬৯% ব্যবহারকারী ঘুম থেকে উঠে প্রথমে মোবাইল চেক করেন।

এই সমস্যা কি রোগ?
বর্তমানে নোমোফোবিয়া এখনও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো মানসিক রোগ নয়। তবে উপসর্গগুলো যদি দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় (ছয় মাসের বেশি), তাহলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ২০১৫ সালে আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী এই ফোবিয়ার লক্ষণ চিহ্নিত করতে একটি প্রশ্নমালা তৈরি করেন, যা শত শত শিক্ষার্থীর উপর প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফলও পেয়েছিলেন।

নোমোফোবিয়া থেকে দূরে থাকার উপায়
রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহার না করা,

দিনে কিছু সময় ইচ্ছাকৃতভাবে ফোন থেকে দূরে থাকা,

প্রয়োজন না হলে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার কমানো,

বাইরে বের হলে মাঝে মাঝে ফোন বাসায় রেখে যাওয়া।

প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করার জন্য তৈরি হয়েছে, তার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সমস্যা নেই। তবে তার আসক্তিতে হারিয়ে গেলে সমস্যা শুরু হয়। মোবাইলের প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েও, তার সীমারেখা তৈরি করাই এখন সময়ের দাবি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/7i6t
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন