English

28.5 C
Dhaka
রবিবার, জুন ২২, ২০২৫
- Advertisement -

চশমা যখন প্রয়োজন, যে কারণে প্রয়োজন

- Advertisements -
অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো মুনির: চোখ আমাদের দেখার প্রধান অঙ্গ। চোখের কর্নিয়া বা লেন্স যদি সঠিকভাবে আলোর প্রতিচ্ছবি রেটিনায় ফেলতে না পারে, তখন দেখা যায় ঝাপসা। এই ঝাপসাভাব দূর করার জন্যই চশমা ব্যবহার করা হয়। চশমা চোখের আলো ভেঙে ঠিকভাবে রেটিনায় পৌঁছাতে সাহায্য করে।

ছোটবেলা থেকে চশমা লাগে যে কারণে : অনেক শিশুর জন্ম থেকেই দৃষ্টির সমস্যা থাকতে পারে। যেমনÑ মায়োপিয়া (দূর দেখা সমস্যা), হাইপারমেট্রোপিয়া (কাছ দেখা সমস্যা) বা অ্যাস্টিগমাটিজম। এসব সমস্যা চোখের গঠনগত কারণে হয় এবং জন্মগত বা বংশগত হতে পারে। পড়াশোনার সময় চোখে চাপ পড়লে বা বেশি মোবাইল দেখলে এই সমস্যা বেড়েও যেতে পারে।

চশমার পাওয়ার প্লাস মাইনাস : চশমার পাওয়ার দুই রকম- প্লাস (+) ও মাইনাস (-)। মাইনাস পাওয়ার লাগে মায়োপিয়া বা দূর দেখা অসুবিধায়। প্লাস পাওয়ার লাগে হাইপারমেট্রোপিয়া বা কাছ থেকে পড়ার অসুবিধায়। অ্যাস্টিগমাটিজম থাকলে পাওয়ারের সঙ্গে সিলিন্ডার (CYL) ও অ্যাক্সিস (AXIS) নামক মানও লেখা থাকে।

পাওয়ার পরিবর্তন যে কারণে হয় : চোখের গঠন বয়সের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। তাই পাওয়ারও পরিবর্তিত হতে পারে। শিশুর ক্ষেত্রে চোখের বৃদ্ধি পাওয়ায় পাওয়ার বাড়তে বা কমতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে বেশি পরিশ্রম, মোবাইল, কম্পিউটার বেশি দেখা, চোখে রোগ ইত্যাদির কারণে পাওয়ার বদলাতে পারে।

যতদিন পর পর পাওয়ার দেখানো উচিত : সাধারণভাবে বছরে একবার চোখ পরীক্ষা করানো উচিত। তবে শিশু বা যাদের পাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, তাদের ৬ মাস পরপর চোখ পরীক্ষা করা ভালো। যদি চোখে বেশি জল পড়ে, মাথাব্যথা করে, ঝাপসা দেখে বা চোখ চুলকায়, তবে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত।

চশমার মান ও সুফল : বয়স বাড়লে (৪০-এর পর) অনেকেই কাছের লেখা পড়তে অসুবিধা বোধ করেন। তখন প্লাস পাওয়ার রিডিং গ্লাস লাগে। একই চশমায় উপরে দূরের জন্য এবং নিচে পড়ার জন্য লেন্স থাকে। এটি দূর ও কাছ দুই দিকেই সুবিধা দেয়।

প্রোগ্রেসিভ লেন্স : বাইফোকালের আধুনিক রূপ, যাতে দূরে, মাঝামাঝি ও কাছের জন্য আলাদা পাওয়ার থাকে, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান ভাগ থাকে না।

সানগ্লাস ও পাওয়ার সানগ্লাস : সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে।

অ্যান্টি-রিফ্লেকশন ও ব্লু-লাইট কোটিং : যারা বেশি কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করেন, তাদের চোখে চাপ কমাতে সাহায্য করে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য : চশমা না পরে থাকলে চোখের সমস্যা বাড়তে পারে। ছোটবেলায় চশমা পরা শিশুরা নিয়মিত চশমা পরলে ভবিষ্যতে লেজার বা অপারেশন ছাড়াই সমস্যা দূর হতে পারে। চোখের ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার (বিশেষ করে ভিটামিন-এ), পর্যাপ্ত ঘুম ও কম স্ক্রিন টাইম চোখ ভালো রাখে। অনেকে লেন্স বা লেজার অপারেশন করতে চান, কিন্তু সব সমস্যার সমাধান এতে হয় না, চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

চশমা শুধু দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে না, অনেক জটিল সমস্যা থেকেও রক্ষা করে। সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা, উপযুক্ত চশমা ব্যবহার এবং এ সম্পর্কে সচেতন হলে আপনার চোখ সুস্থ ও শক্তিশালী রাখা সম্ভব।

লেখক : গ্লুকোমা ও ছানি বিশেষজ্ঞ এবং প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

চেম্বার : বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ, ঢাকা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/jlwf
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন