রান্নার আগে অনেকেই মাংস, বিশেষ করে মুরগির মাংসকে দই, মসলা বা এসিডযুক্ত কোনো মিশ্রণে মাখিয়ে রাখেন। এই প্রক্রিয়াকে ম্যারিনেশন বলা হয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, এই ম্যারিনেশন কি কেবলই সময়ের অপচয়, নাকি সত্যিই এতে মাংসের স্বাদ বাড়ে এবং এটিকে নরম করতে সাহায্য করে?
বিজ্ঞান ও রন্ধনশিল্পীদের মতে, ম্যারিনেশন কেবল মাংসের স্বাদই বাড়ায় না, এটি রান্নাকে এক অন্য স্তরে নিয়ে যেতে পারে।
মূলত দুটি প্রধান উপায়ে ম্যারিনেশন কাজ করে।
প্রথমত, স্বাদ যুক্ত করে। দ্বিতীয়ত, নরম করে। এ ছাড়া আর কী কাজ করে ম্যারিনেশন, জেনে নিন—
মসলা প্রবেশ করে
ম্যারিনেশনে ব্যবহৃত মসলা, ভেষজ, লবণ ও চিনি মাংসের তন্তুর মধ্যে প্রবেশ করে। এটি মাংসের অভ্যন্তরীণ স্বাদকে সমৃদ্ধ করে তোলে।
তেল ও ফ্যাট
তেল, ঘি বা মাখনের মতো উপাদানগুলো মসলার স্বাদকে ধরে রাখে এবং রান্নার সময় তাপকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
অ্যারোমা
ম্যারিনেটের সুগন্ধি উপাদান, যেমন- আদা, রসুন, ধনে পাতা ইত্যাদি মাংসের গন্ধে এক নতুন মাত্রা যোগ করে।
এসিডের ভূমিকা
দই, লেবুর রস বা ভিনেগারের মতো এসিডযুক্ত উপাদান ব্যবহার করা হয়। এই এসিডগুলো মাংসের প্রোটিনের গঠন ভেঙে দেয়।
যার ফলে মাংস নরম হয়ে যায়।
এনজাইমের কাজ
কাঁচা পেঁপে থাকে পেপেইন, যা মাংসের পেশি তন্তুগুলোকে আরো ভেঙে দেয়। ফলে মাংস অতিরিক্ত সরস ও নরম হয় ওঠে।
আর্দ্রতা ধরে রাখা
দই বা বাটারমিল্কের মতো উপাদানগুলো ম্যারিনেশনের সময় মাংসের ভেতরে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে রান্নার পরেও মাংস শুকিয়ে যায় না, বরং সরস ও রসালো থাকে।
ম্যারিনেশন নিছক একটি রন্ধন প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি সময়সাপেক্ষ কৌশল, যা চিকেনকে সুস্বাদু, নরম ও রসালো করে তুলতে কাজ করে। এটি মাংসকে দ্রুত রান্না করতেও সাহায্য করে।
তাই, আপনি যদি মাংসের রেসিপিকে আরো আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু করতে চান, তবে অবশ্যই সঠিক মসলা ও সময় দিয়ে ম্যারিনেশন করুন। এই সামান্য সময় বিনিয়োগ আপনার খাবারের স্বাদকে দ্বিগুণ করে তুলবে।
