আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা (বডি-ওর্ন ক্যামেরা) কেনার প্রক্রিয়া আগামী এক-দুইদিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বডি ক্যামেরা কেনার প্রক্রিয়া আগামীকাল বা পরশুর মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
বডি-ওর্ন ক্যামেরা (বিডব্লিউসি), যা সাধারণভাবে বডিক্যাম নামে পরিচিত, একটি পরিধানযোগ্য অডিও, ভিডিও বা স্থিরচিত্র ধারণকারী ডিভাইস, যা সাধারণত পুলিশের পোশাক বা হেলমেটে সংযুক্ত থাকে। এটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকাণ্ড নথিবদ্ধ করা এবং প্রমাণ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হয়।
বডিক্যামে ধারণ করা ফুটেজ অভিযোগ প্রতিরোধ ও নিষ্পত্তি, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং পুলিশের কর্মদক্ষতা ও জবাবদিহিতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অপরাধ সংঘটন, পুলিশ-নাগরিক মিথস্ক্রিয়া বা বলপ্রয়োগের ঘটনার সময় এটি নির্ভরযোগ্য অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে বিবেচিত।
এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি (এসিসিইএ) প্রায় ৪০ হাজার বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা হবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এসিসিইএ-র ৩১তম সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে ড. সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বডিক্যাম ক্রয় প্রক্রিয়া জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডিক্যাম দেওয়া হবে। এ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। দ্রুতই সেগুলো আনা হবে।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সরকার ইতিমধ্যে সারাদেশে ভোটকেন্দ্রগুলোকে ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে, যাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, আসন্ন নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ, ৫ লাখ ৫০ হাজার আনসার সদস্য, প্রায় ১ লাখ সেনা সদস্য এবং ৩০ হাজারেরও বেশি বিজিবি সদস্য সারা দেশে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও সামগ্রিক শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
