রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গতকাল শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা একটি ফ্লাইটে বোমা আছে বলে কল করে জানান এক নারী। পরে ফ্লাইটটিতে ৩ ঘণ্টার নিবিড় তল্লাশি চালিয়েও কোনো বোমা পাওয়া যায়নি। পরে এ ভুয়া তথ্য দেওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব জানায়, ছেলে যেন পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে নেপালে যেতে না পারে, সে জন্য তার মা ফোন দিয়ে বিমানে বোমা থাকার কথা জানান।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান।
র্যাব ডিজি বলেন, ‘ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বোমা রয়েছে- এমন একটি ফোন কল করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানানো হয়। যার ফলে ওই বিমানে যাত্রা স্থগিত করা হয় এবং ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে মারাত্মক ক্ষুণ্ন হয়। ইতোপূর্বেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। টেলিফোনের মাধ্যমে বোমার খবর দেওয়া হয়, পরবর্তীতে তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পরপরই আমরা অনুসন্ধানে নামি। সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করি। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সহযোগিতা করেছে। এই বিষয়টি একটি দুঃখজনক ঘটনা।’
শহিদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে জানা যায়, ইমন নামের এক ব্যক্তি পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে এই ফ্লাইটে করে নেপাল যাচ্ছিলেন। বিষয়টি ইমনের মা ও তার স্ত্রী জানতে পারেন এবং তার যাত্রা বন্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালান, কিন্তু তারা কোনোভাবে সক্ষম হননি। তখন ইমনেরই বন্ধু ইমরান তাদের পরামর্শ দেন যদি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে জানানো হয়, বিমানে বোমা আছে তাহলে যাত্রাটা স্থগিত হয়ে যেতে পারে। সে অনুযায়ী ইমনের মা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে বিমানে বোমা থাকার তথ্য জানান।’
র্যাব ডিজি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই, এটি একটি গর্হিত কাজ। এসব কাজে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এবং আমাদের জাতীয় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। কোনোভাবেই যেন এ ধরনের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে গ্রহণ করা না হয়। তারপরও গ্রহণ করলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’