English

36 C
Dhaka
শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
- Advertisement -

প্রচারের ১৯ দিনে প্রার্থীদের যা মানতে হবে

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারের সময় পাচ্ছেন ১৯ দিন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও একই সময় দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, প্রতীক নিয়েই প্রচার শুরু করতে পারেন প্রার্থীরা। আর তা শেষ হয় ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাচ্ছেন সোমবার (১৮ ডিসেম্বর), আর প্রচার শেষ হবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায়। এই হিসেবে প্রার্থীরা প্রচারের সময় পাচ্ছেন ১৯ দিন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৮টায়। সে বছর ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হলে সেখানে থেকে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচার চলেছে। সে হিসেবে সেবার প্রার্থীরা ১৯ দিন প্রচারের সময় পেয়েছিলেন।

প্রচারে যা মানতে হবে প্রার্থীদের

পোস্টার রঙিন করা যাবে না। পোস্টারে প্রার্থী ছাড়া দলীয় প্রধানের ফটো ব্যবহার করা যাবে, তবে তা দড়িতে ঝুলিয়ে প্রচার করতে হবে। ৪’শ বর্গফুট এলাকার বেশি বড় কোনো প্যান্ডেল করে প্রচার চালানো যাবে না। কাপড়ের তৈরি ব্যানার করে প্রচার চালানো গেলেও ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহার করা যাবে না। জনসাধারণের চলাচলের অসুবিধা হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে হবে।

সভা করতে হলে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে অবহিত করে অনুমতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে সভার দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে।

মাইকে প্রচার হতে হবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা মধ্যে। নির্বাচনী এলাকায় প্রতি ইউনিয়ন আর পৌর ও সিটি এলাকার ওয়ার্ড প্রতি নির্বাচনী ক্যাম্প করতে হবে একটি। ক্যাম্পে ভোটারদের কোনো কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনোরূপ উপঢৌকন দিতে পারবেন না। প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকা বা অন্যত্র অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা বা অনুদান প্রকাশ্যে বা গোপনে দিতে পারবেন না। এমনকি অঙ্গীকার করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। প্রচারের জন্য কোনো গেট, তোরণ নির্মাণ বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবে হবে। নির্বাচনী ক্যাম্প এমন স্থানে তৈরি করতে হবে যেন জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা না হয়।

মোটরসাইকেলসহ যে কোনো মোটরগাড়িতে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোভাযাত্রা একদম নিষিদ্ধ। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত কোনো প্রাণীর ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে।

পোস্টারের সাইজ দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার কোনোভাবেই তিন মিটারের বেশি হবে না। প্রচারের অংশ হিসেবে যে কোনো প্রকার দেয়াল লিখন, পোস্টানো সাঁটানো দণ্ডনীয় অপরাধ।

প্রচারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অন্য কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সম্মানহানিকর কিছু করতে পারবে না। কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া যাবে না। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, বিস্ফোরক বহনও থেকে বিরত থাকতে হবে।

সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সকল সুবিধা ত্যাগ করে প্রচার কাজে অংশ নিতে হবে। কোনো ডাক বাংলা ব্যবহার, সরকারি গাড়ি ব্যবহারসহ প্রোটোকল ছাড়তে হবে। এছাড়া সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না তারা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ আইনে অনুমতি থাকায় নিরাপত্তার কারণে প্রটোকল পাবেন।

বন্ধ রাখতে হবে অনুদানের ঘোষণা, প্রকল্প, ফলক উন্মোচন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও। সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের মেয়ররাও সুবিধাভোগের বাইরে থাকবেন। তবে সরকারি কাজে তারা সরকারি সুবিধা পারেন। কিন্তু সরকারি কাজে গিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।

দলীয় প্রধান ছাড়া অন্য কেউ হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচার সামগ্রী প্রদর্শন বা বিতরণ করতে পারবেন না।

এছাড়া দেওয়াল, দালান, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়কদ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অংকন করতে পারবেন না কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি। পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল সিটি ও পৌর এলাকার দালান, দেওয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে, সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনাসমূহে এবং যানবাহনে সাঁটাতে পারবেন না। অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টারের ওপর নিজের পোস্টার লাগানো বা অন্যের প্রচার সামগ্রী নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

প্রার্থীকে আইনে নির্ধারিত ব্যয়সীমা মধ্যে থেকে প্রচারে নির্বাচনী ব্যয় করতে হবে। এবার ভোটার প্রতি ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১০ টাকা। তবে কোনো আসনে ভোটার সংখ্যা যাই হোক না কেন সর্বোচ্চ ২৫ লাখ ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থীরা। এই ব্যয় একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাব থেকে বহন করতে হবে। প্রতিদিনের ব্যয় ভাউচারসহ সংরক্ষণ করে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তারা কাছে জমা দিতে হবে সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের।

কোনো প্রার্থী আইনে নির্ধারিত এই সকল নির্দেশনা মানলে ছয়মাসে জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আর কোনো দল এই নির্দেশনা না মানলে দলের জরিমানা হবে ৫০ হাজার টাকা।

ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ বিষয়ে বলেছেন, সকল প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা মেনে চলতে হবে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসির আইন শাখা জানিয়েছে, নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য মাঠে থাকছেন নির্বাহী হাকিম। ইতিমধ্যে ৮০২ জন নির্বাহী হাকিম মাঠে নেমেছেন। আর ভোটের দু’দিন আগে থেকে পাঁচদিনের জন্য মাঠে নামবেন ৬৫৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। তারা সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন।

আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ২৭টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৯৬ জন। তবে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা এলে এই সংখ্যা আরো বাড়তে বা কমতে পারে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ১০৩টি। আর ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৫২ জন।

চার লাখ ছয় হাজার ৩৬৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, দুই লাখ ৮৭ হাজার ৭২২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৩ জন পোলিং অফিসার, মোট নয় লাখ নয় হাজার ৫২৯ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ভোটের আগে পরে ১৩ দিন নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আনসারের পাঁচ লাখ ১৬ হাজার সদস্য, কোস্টগার্ডের ২ হাজার ৩৫০ জন, বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ সদস্য, পুলিশের (র‌্যাবসহ) থাকবে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন সদস্য। অর্থাৎ সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য ভোটের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীও।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন