English

30 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
- Advertisement -

বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রক্রিয়ায় দলের অভ্যন্তরেই নানা খেলা শুরু হয়: শেখ হাসিনা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন তখন প্রয়োজন ছিল একাট্টা হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো। তাকে সহযোগিতা করা। কিন্তু দুর্ভাগ্য কেউ সহযোগিতা করেনি বরং তাকে হত্যা করার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য দেখা গেছে দলের অভ্যন্তরে নানা ধরনের খেলা।
তিনি বলেন, দেশের কিছু লোক যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দালালি করত, পাশাপাশি জানা-অজানা কিছু লোক নানাভাবে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল।
রোববার (২৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এ সভার।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকাবহ যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করা হয়।সূচনা বক্তব্য রাখেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ডক্টর কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এরপর বঙ্গবন্ধুর কর্মময় ও সংগ্রামী জীবনের ওপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন আসাদুজ্জামান নূর এমপি। এছাড়া আলোচনা সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট শুধু একটা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তাই নয়। যে লক্ষ্য নিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে, স্বাধীনতার লক্ষ্যটাকে ধ্বংস করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বাঙালিরা যে পরাজিত করেছে এটা তারা মানতে পারেনি। বাঙালি জাতির বিজয়কে তারা মানতে পারেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের পাশে ছিল তারাও মানতে পারেনি। ষড়যন্ত্র চলছিল তখন থেকেই। আমাদের দেশের ভেতরেও অনেকে মানতে পারেনি। জাতির পিতাকে হত্যা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
একটা ইন্টারভিউয়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই ইন্টারভিউ যদি আপনারা দেখেন, যখন তাকে (বঙ্গবন্ধু) গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় তখন পেছন থেকে বন্দুকের বাট দিয়ে বারবার আঘাত করা হয়েছিল। এরপর তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে সেখানে তার বিচার হয় এবং ফাঁসির রায় দেয়া হয়। যেহেতু বাঙালিরা বিজয় অর্জন করেছিল, বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রায় ৯৫ হাজার সৈনিক বন্দি হয়েছিল এবং তাদের লোকেরা বন্দি ছিল; যে কারণে ইয়াহিয়ার পতন ঘটে এবং ভুট্টো ক্ষমতায় যায়।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে এবং ভারতবাসীকে যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যে সব দেশ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চেয়ে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়েছে তাদেরও ধন্যবাদ। এভাবে যখন বিশ্বব্যাপী একটি জনমত সৃষ্টি হয় তখন তারা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন। যখন তিনি ফিরে এসেছিলেন তখন ছিল একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। যে দেশের মানুষ পাকিস্তানিদের কারণে শোষণ বঞ্চনার শিকার হয়েছে। সেই দেশের শাসনভার হাতে নিয়েই তিনি যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছিলেন, সেই সময় প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষ একাট্টা হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাকে হত্যা করার এই প্রক্রিয়াটা শুরুর জন্য দেখা গেছে দলের অভ্যন্তরে যেমন নানা ধরনের খেলা শুরু হয় এবং কিছু লোক যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দালালি করত এর পাশাপাশি জানা-অজানা কিছু লোক নানাভাবে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। যারা শেষ সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে, তাদের লেখনি এবং কার্যকলাপ ছিল পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর যে জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা সেটা নষ্ট করা। কিন্তু জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা ঠেকাতে না পেরে তারা হত্যার পথ বেছে নেয়। বিবিসির কাছে দেয়া কর্নেল ফারুক এবং রশিদের যে ইন্টারভিউ সেখানে তারা সেই কথাই বলেছিল যে দীর্ঘদিন তারা চেষ্টা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে সরাতে কিন্তু তাকে জনগণের কাছ থেকে সরানো যায়নি। এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে জিয়াউর রহমান জড়িত এটাও কর্নেল ফারুক রশিদ বলেছেন। মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করল তখন খুনি ফারুক-রশিদ, মেজর ডালিম, জিয়া মোশতাকের পাশেই ছিল। জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করেই মোশতাক প্রমাণ দিল যে তারা একই গোত্রের লোক। চক্রান্তে তারা সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু মোশতাক খুব বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। আমি ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে বেঈমানি করেছিল মীরজাফর, ব্রিটিশ বেগুনিয়া দল তাকে ব্যবহার করেছিল কিন্তু সেও কিন্তু তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। দুই মাসের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পরে তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল। যাদের হাত দিয়ে সে ক্ষমতায় এসেছিল যাদের পরোচনায় সে এই বেঈমানিটা এবং মোনাফেকি করেছিল তারাই তাকে বিদায় করে। জিয়া নিজেকে একাধারে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনাকালে সেনাবাহিনীর মধ্যে অনেক মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে হত্যা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সংবিধান বঙ্গবন্ধু ৯ মাসে উপহার দিয়েছিলেন সে সংবিধানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি সংবিধান ছিল। সে সংবিধানে জনগণের কথা বলা হয়েছে, মানুষের মৌলিক চাহিদার কথা বলা হয়েছে, আর্থসামাজিক উন্নতির কথা বলা হয়েছে। সেই সংবিধানকে সঙ্গীনের খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত করা হলো।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন