রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা। ফায়ার সার্ভিসের ৯ টি ইউনিট সেখানে কাজ করছে। স্কুলের আশেপাশে ভিড় করছেন স্কুল পড়ুয়া শিশুদের অভিভাবক, স্বজন ও উৎসুক জনতা। তাদের সবার চোখে মুখে রাজ্যের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
জানা গেছে, ঘটনার সময় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে শ্রেণি কার্যক্রম চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে বিমানটি ভেঙে পড়লে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। স্কুলের অভিভাবকরা খবর পেয়ে দিকবেদিক ছুটছেন সন্তানদের খোঁজ নিতে। অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
বিমানে আগুন লাগার বিষয়ে মাইলস্টোন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সবুজ মিয়া বলেন, স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশ মুখে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তখন স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। কিছু শিক্ষার্থী বের হয়ে গেছে, অনেকে ভেতরেই ছিল। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায়। মুহূর্তেই ধুয়ার কণ্ডলী বের হতে থাকে। আশপাশের এলাকা অন্ধকার হয়ে উঠে।
ঘটনাস্থলে থাকা লাকি আক্তার নামে একজন অভিভাবক জানান, তার দুই সন্তান এখানে পড়তেন। বড় সন্তানকে বের করতে পরেছেন। তবে ছোট সন্তান এখনও আটকে রয়েছেন। তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি।
ফেরদৌসি বেগম নামের আরেক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে ভেতরে আটকা পড়েছেন। তিনি তার মেয়ের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না।
ঘটনাস্থল থেকে ফেসবুকে প্রত্যক্ষদর্শীদের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায় ভবন থেকে পোড়া শরীর নিয়ে দৌড়ে বের হচ্ছেন একের পর এক দগ্ধ। তবে এদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে অনেককে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ফেসবুকে মারজুকুল ইসলাম সাকিব নামে একজন লিখেছেন, ‘ছোট বাচ্চাগুলো আগুনে পোড়া শরীর নিয়ে হেঁটে হেঁটে বের হচ্ছে।’
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২৭ জন দগ্ধ অবস্থায় আমাদের এখানে এসেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ চিকিৎসক আরও বলেন, এখনো দগ্ধ আহতদের হাসপাতালে আনা হচ্ছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।