জুলাই গণহত্যার বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হোক—দেশে হাসিনার নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট শাসনের আগমন যেন আর কখনো না হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনের মতো দেওয়া সাক্ষ্যে এসব কথা বলেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে তার অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন– বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
পৃথিবীর কোনো ফ্যাসিস্ট শাসন গণতান্ত্রিক উপায়ে অপসারণ সম্ভব নয় উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা মধ্যেপ্রাচ্যের আরব রেভল্যুশনের সময় দেখেছি—মিসর ও তিউনিসিয়ায় গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইতালি ও জার্মানিতে ফ্যাসিস্ট শাসক মুসোলিনি ও হিটলারের পতন হয়েছিল। যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর জার্মানিতে সে সময় জনগণকে বিশেষ করে ইহুদি জনগোষ্ঠীর ওপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে আওয়াজ উঠেছিল ‘নেভার অ্যাগেইন’, অর্থাৎ আর যেনো কখনো হিটলারের নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট শাসনের আগমন না ঘটে। বাংলাদেশও শেখ হাসিনার ১৫ বছরের চরম দুর্নীতিপরায়ণ এবং মানবতাবিরোধী শাসনের প্রেক্ষিতে জনগণের প্রত্যাশা হলো—আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসুক।’’
এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলো ন্যায়বিচার দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। এর সঙ্গে আরও যে ২০ হাজার আহত জুলাইযোদ্ধা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে, তারাও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কমান্ড রেসপনসেবলিটিতে যারা ছিলেন, তাদের বিচার দেখতে চান। এই আসামিরা হত্যাকাণ্ড এবং নৃশংসতা বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘১১ বছর ধরে আমি বিগত ফ্যাসিবাদের উত্থান, বিকাশ প্রত্যক্ষ করেছি। এই বিষয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার, লেখালেখি ও মিডিয়ার বক্তব্যর মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করার চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, অপরাধীরা যেন সাজা পায়। যাতে শহীদ পরিবার, আহত জুলাইযোদ্ধা এবং তাদের পরিবার ন্যায়বিচার পাওয়ার মাধ্যমে শোক কিছুটা হলেও লাঘব হয়।’