বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ (পারস্পরিক বা পাল্টা শুল্ক) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই পর্যায়ের আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ করবে। আশা করি, বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে।
বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শেষে দেশে ফিরে আজ সোমবার (১৪ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দফার শেষ দিন ছিল গত ১১ জুলাই। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এ আলোচনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এবিষয়ে নন-ডিসকলোজার এগ্রিমেন্ট (গোপনীয়তার চুক্তি) রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র কি চেয়েছে, বা কি আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, পাল্টা শুল্ক বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অভিঘাত। সেজন্য সরকার সর্বাত্বক পর্যায়ে জড়িত থেকে কাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু কাজ করা হয়েছে, আরো কিছু কাজ করতে হবে। এখন আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। তাদের মতামত নিলাম। আমাদের প্রস্তুতি আছে। সামনে যেকোন বিষয়ে আসলে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপরে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্র এ শুল্ক আরোপ করার পরে বিশ্ববাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়লে— ৭ এপ্রিল এই শুল্ক ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে।
এরমধ্যেই গত ৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন। নতুন এ শুল্ক হার ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
এর মধ্যে বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। বাংলাদেশও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার চেষ্টা করছে। সেজন্যই বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর– ইউএসটিআর -এর সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। যদিও ওইসব বৈঠকে সব বিষয়ে একমত হতে পারেনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র।
সাংবাদিকদের ব্রিফিং এর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন- বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজদের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।