English

28 C
Dhaka
বুধবার, মে ১, ২০২৪
- Advertisement -

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮- এর পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে নিসচা বগুড়া শাখার সংবাদ সম্মেলন

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

০১ জানুয়ারি ২০২১ হতে জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮- এর পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই এই দাবিতে নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ মোতাবেগ আজ সারাদেশের ন্যায় বগুড়া নিরাপদ সড়ক চাই জেলা শাখার পক্ষ থেকে বগুড়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বগুড়া জেলা নিসচা শাখার সভাপতি রোটা: মো: মোস্তাফিজার রহমান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’-এ স্লোগানে সামাজিক আন্দোলন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র জন্ম আজ থেকে ২৭ বছর আগে, ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর। এদিন সড়ক দুর্ঘটনায় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে এ আন্দোলনের সূচনা হয়।
দীর্ঘ এ আন্দোলনে নিসচার অনেক অর্জন এসেছে। নিঃসন্দেহে এসব সাফল্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তবে কোনো প্রাপ্তিতেই আমরা থেমে থাকিনি। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা শুরু থেকে একটি সময়োপযোগী আইনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। পাশাপাশি আইন করলে হবে না সড়কে আইন মানতে মানুষকে সচেতন করার ওপর জোর দিই। এজন্য ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানাই।
আমাদের লক্ষ্য ছিল, নিরাপদ সড়কের জন্য একটি দিবসকে যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা যায় তা হলে জনগণের মাঝে এ বিষয়ে একটি সচেতনতা তৈরি হবে। সরকার আমাদের দাবিকে সম্মান জানিয়ে ২০১৭ সাল থেকে দিবসটির জাতীয় স্বীকৃতি দিয়েছে এবং দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, এতে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আরও জোরালো হয়েছে। আমাদের দীর্ঘদিনের আরেকটি দাবি, সময়োযোগী সড়ক আইন, সেটিও পূরণ হয়েছে। এখন দরকার এ আইনের সঠিক প্রয়োগ।
কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরও ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর প্রয়োগের দিন থেকেই আইনটি হোঁচট খেল। আইনটির যথাযথ প্রয়োগে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবহন সেক্টরের একটি অশুভ শক্তি। যদিও জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইনের সংস্কার আমাদের দাবি ছিল। সরকারও বিভিন্ন সময় ১৯৮৩ সালে প্রণীত আইনটিকে সময়োযোগী করার উদ্যোগও নেয়। অনেকটা সময় পেরিয়ে সড়কের বিশৃঙ্খল অবস্থার বাস্তবচিত্র এবং ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ বাস চাপায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ এবং দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানো রাজীবের মর্মান্তিক মৃত্যুসহ বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন এ আইনটি পাসের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে। অবশেষে কোনও চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে সরকার এ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস করে ২০১৮ সালে। এর প্রায় ১৫ মাস পর ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর শুরু করে সরকার। প্রথম ১৪ দিন সহনীয় মাত্রায় এর প্রয়োগ ছিল। পরবর্তীতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিতে আইনের কয়েকটি বিষয় পরবর্তী ছয়মাস পর্যন্ত বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরবর্তীতে করোনার কারণে এই আইন যথাযথ প্রয়োগের সময়সীমা বৃদ্ধি করে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
একটা কথা বলতে দ্বিধা নেই সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রয়োগে যখনই উদ্যোগ নেয় তখনই পরিবহন সেক্টরের সেই চক্রটি বাঁধা সৃষ্টি করে। তারা নতুন করে নানা ধরনের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে দেয়।
সেইসাথে বলবো এই আইন বাস্তবায়নে সরকারের যে সব স্টোকহোল্ডার রয়েছে সেখানেও এক ধরনের শৈথিল্য লক্ষ্য করছি। এই আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব যেমন আছে তেমনি সরকারের সেইসব মহলেরও নানা পদক্ষেপ নেয়া খুবই জরুরি।
আমরা মনে করি, এই আইনের সঠিক প্রয়োগে ও বাস্তবায়নে যদি কোন মহলের চাপের মুখে সরকার মনোভাব পরিবর্তন করে তাহলে হেরে যাবে ১৮ কোটি জনতা। সেইসঙ্গে হেরে যাবে বাংলাদেশ।’
আমাদের চূড়ান্ত প্রত্যাশা- দুর্ঘটনামুক্ত সড়ক, নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা করা। যতদিন এটি পূরণ না হবে ততদিন আমরা নিরাপদ সড়ক চাই এর কর্মীরা সড়কে আছি, থাকবো। আইন প্রয়োগ নিয়ে চলমান সংকট উত্তরণে আইনটির যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদার এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটি যে ১১১টি সুপারিশ করেছে, তাতে বাস্তবায়নের পথ নির্দেশ রয়েছে। পুরো সড়ক ব্যবস্থাপনা সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেউ আইন ভঙ্গ না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার শঙ্কা অমূলক। যারা অন্যায় করবেন, তাদেরই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পরিবহন মালিক হোক বা শ্রমিক হোক কারও চাপের মুখে নতি স্বীকার করা যাবে না। আইনের বাস্তবায়ন আটকে রাখা যাবে না। মানুষকে জিম্মি করে, সরকারকে বিব্রত করে যদি কেউ এই আইনের বাস্তবায়ন ঠেকানোর চেষ্টা করেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এটাই এখন আমাদের দাবি।
যদিও প্রত্যাশার জায়গা বারবার হোচট খেলে হতাশ হতে হয়। কিন্তু আমরা আশাবাদী। সেইসাথে দাবি জানাচ্ছি এখনও দুইমাস সময় আছে। আপনাদের মাধ্যমে আবেদন করছি এরমধ্যে প্রত্যেক সেক্টরকে তাদের দুর্বলতার জায়গাগুলো সংশোধন করে এই আইন প্রয়োগে এগিয়ে আসবেন এবং সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি আগামী ০১ জানুয়ারি ২০২১ সাল হতে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন যেন করা হয়। এরপর যেন আর কোন সময় বৃদ্ধি না করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা নিসচা শাখার সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু, সাধারন সম্পাদক রকিবুল ইসলাম সোহাগ, প্রকাশনা সম্পাদক গোলাম রব্বানী শিপন, অর্থ সম্পাদক মির্জা রেজা, সাধারন সদস্য আলআমীন, এস আই সুমন, ইমরান তালুকদারসহ আরো অনেকে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন