সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অগণতান্ত্রিকভাবে তাদের উৎখাত করতে চাওয়ার ফলেই কোথাও কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার (৩১ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হেফাজতের চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এমন কথা বলেন যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।
গত ২৮ মার্চ সারা দেশে হরতাল কর্মসূচিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে সহিংসতা সৃষ্টি, গাড়ি পোড়ানো ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং মারধরের ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে অভিযোগ অস্বীকার করেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। তিনি বলেন, সকাল ৬টা থেকে তাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিল। তাঁর দাবি, হেফাজতের কেউ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ বা সাংবাদিকদের মারধর করেনি।
মামুনুল হক জানান, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল পদত্যাগের ঘোষণা প্রত্যাহার করেছেন। যুগ্ম মহাসচিব জানান, হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর নির্দেশে তাঁরা মাওলানা আবদুল আউয়ালের সাথে সাক্ষাৎ করতে নারায়ণগঞ্জে এসেছেন।
সম্প্রতি নেতাকর্মীদের সাথে নায়েবে আমির আব্দুল আউয়ালের ভুলবোঝাবুঝি ও মান-অভিমান সৃষ্টি হয়েছিল। সবার অনুরোধে সবকিছু ভুলে গিয়ে আব্দুল আউয়াল তার পদত্যাগের ঘোষণা প্রত্যাহার করেছেন। পূর্বের পদে বহাল থেকেই তিনি হেফাজতের পরবর্তী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকবেন।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদল মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সাথে বৈঠক করতে দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে ডিআইটি মসজিদে উপস্থিত হন। আসরের নামাজের জামাত শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিং করেন মামুনুল হক। এ সময় প্রতিনিধিদলে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করীম কাসেমী এবং যুগ্ম মহাসচিব মুফতি নাসির উদ্দিন মনির। সাথে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এর আগে গত ২৮ মার্চ শবেবরাতের রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বয়ানে নানা ক্ষোভের বিষয় তুলে ধরে হেফাজতের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন মাওলানা আবদুল আউয়াল। এ সময় মাওলানা আব্দুল আউয়াল দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁর নির্দেশনা মানছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে ফেসবুকে ‘শায়েখ মাওলানা আবদুল আউয়াল সাহেব সমর্থক’ নামের একটি পেজে তার পদত্যাগসংক্রান্ত এমন বক্তব্যের একটি ভিডিওচিত্র আপলোড দেওয়া হয়।
৪ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে আবদুল আউয়াল হেফাজতে ইসলাম দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।