বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন, আন্দোলনের সময় সমন্বয়কদের চেয়ে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি সহায়তা করেছে। গতকাল মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক লাইভ ভিডিও বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
উমামা বলেন, “সমন্বয়ক টার্মটা আন্দোলনের সময় কিছুটা দরকার ছিল—যেমন, আমি যদি বিপদে পড়ি তাহলে যেন কাউকে ফোন করে কানেক্ট করতে পারি। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। ৫ আগস্ট পর্যন্ত সমন্বয়ক লিস্টে থাকা বেশিরভাগ মানুষকেই আমি রিচ করতে পারিনি।”
তিনি জানান, আন্দোলনের সময় ৫২, ৬২ ও পরে ১৫৮ জন সমন্বয়কের একটি তালিকা তৈরি হলেও তারা অনেকেই দায়িত্ব পালন করেননি। বরং সাধারণ মানুষই স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে নেমেছে, কানেক্টেড থেকেছে এবং আন্দোলনের গতি বজায় রেখেছে।
উমামা ফাতেমা বলেন, “জুলাই-আগস্টের সময় মনে আছে, যেভাবে অভ্যুত্থান হচ্ছিল—সেটা এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত ছিল যে বোঝা যাচ্ছিল না কে কোন দিক থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাধারণ মানুষ যে যেভাবে পেরেছে, কানেক্ট করেছে। অথচ যাদের আমরা সমন্বয়ক ভাবছিলাম, তাদের অনেকেই সেই ভূমিকা রাখতে পারেনি।”
৫ আগস্টের পরদিন থেকে সমন্বয়ক পরিচয়ে নানা ধরনের দখল ও অনিয়মের অভিযোগও তুলে ধরেন উমামা। তিনি বলেন, “সমন্বয়ক পরিচয়ে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দখল করছে, কেউ কেউ আবার চাঁদাবাজিতেও জড়িয়েছে।”
আন্দোলনের ভেতরে একটি ‘সমন্বয়ক বাহিনী’ গড়ে উঠছে কিনা, সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা উপন্যাসের উদাহরণ টেনে উমামা বলেন, “সেখানে আওয়ামী লীগের রক্ষীবাহিনী বিভিন্ন জায়গায় দখল নিতে থাকে। এখন মনে হচ্ছে, ঠিক সেভাবেই সমন্বয়ক বাহিনী গড়ে উঠছে।”
তিনি লাইভে স্পষ্ট করেন, “গতকাল পর্যন্ত কেউই সমন্বয়ক পরিচয় নিতে চাইছিল না, আর আজ দেখি সবাই সমন্বয়ক। এটা প্রশ্ন তো তুলেই।”