English

22 C
Dhaka
বুধবার, নভেম্বর ১২, ২০২৫
- Advertisement -

আ’লীগের লকডাউন প্রতিরোধে সতর্ক বিএনপি

- Advertisements -

আওয়ামী লীগের পূর্ব ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঠেকাতে আজ রাজপথে থাকবে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। এদিন নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটিকে মোকাবিলায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থানের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায়ও লাঠি হাতে সর্তক অবস্থানে থাকবে রাজনীতিক দলগুলো। এরআগে ১৩ নভেম্বর লকডাউন ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। এ অবস্থায় নাশকতা ঠেকাতে সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকায় নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

আ’লীগের লকডাউন প্রতিরোধে সতর্ক বিএনপি: জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ঢাকা লকডাউনের পরিকল্পনা ঘিরে ওইদিন যেকোনো ধরনের সহিংস বিক্ষোভ প্রতিরোধে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বিএনপি নেতাকর্মীরা। মূলত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীরা সজাগ থাকবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার পর রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের এমন চোরাগোপ্তা হামলা বন্ধে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী মহানগর বিএনপি ও সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। যাতে পলাতক আওয়ামী লীগ ও তাদের কোনো দোসররা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে না পারে। ঢাকায় ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের লকডাউনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, রাজধানীতে কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না। নাশকতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে ও সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা মাঠে থাকব।

যদিও এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা আসেনি, তবুও এই সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু আমার দেশকে বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে এখনো কোনো দলীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অপশক্তি যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেই জন্য নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে। ঢাকা-৫ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আলহাজ¦ নবী উল্লাহ্ নবীর নির্দেশে আজ সর্তক অবস্থানে থাকবে ৬৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল ভুইয়া তুহিনের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। কোনাপাড়া-রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে পাহারা দেবে সাবেক ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো: জাকির হোসেন জিকু’র নেতৃত্বে স্থানী বিএনপির নেতাকর্মীরা। একইভাবে যাত্রাবাড়ি,সুত্রাপুর,ওয়ারী,শাহবাগসহ রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় সর্তক অবস্থানে থাকবে তৃণমূল বিএনপি।
পরিস্থিতি দেখে প্রতিরোধ গড়বে জামায়াত: আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশে বড় ধরনের নাশকতা ও অস্থিরতা তৈরির নানা পরিকল্পনার কথা প্রচার হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দলটি।

এ বিষয়ে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দেশবাসীকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াত নেতারা। পরিস্থিতি দেখে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন,আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা আগেও অনেক হুমকি-ধমকি দিয়েছে। তারা অতীতে দেশের বড় ক্ষতিও করেছে। তাই নতুন করে সেই ফ্যাসিবাদ যাতে আর মাথাচাড়া দিতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য জনস্বার্থে সরকার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে দেশবাসীকেও সতর্ক থাকতে হবে। আমাদেরকেও তৎপর থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের মোকাবিলায় সবাই মিলে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের কোনো তৎপরতা থাকবে না।

তবে পরিস্থিতি বুঝে দেশবাসীকে নিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। একই ধরনের মন্তব্য করে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জুলাই বিপ্লবপরবর্তী বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় কিছু করার মতো অবস্থানে নেই আওয়ামী লীগ। তাদের শীর্ষ নেতারা দেশের বাইরে। এ অবস্থায় কেউ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চক্রান্ত করলে তা জনগণ ব্যর্থ করে দেবে। এ নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে বলে মনে করি না। তবে গোয়েন্দাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দায়িত্ব সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এ নিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে,আওয়ামী লীগের পূর্ব ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঠেকাতে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। গতকাল বুধবার দুপুরে মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ৮ দলের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এই ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানেরও হুঁশিয়ারি দেয় দলগুলো। আট দলের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-১৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে আট দলের নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের জনশক্তিসহ দেশব্যাপী রাজপথে অবস্থান করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরেরদিন শুক্রবার একই দাবিতে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ১৬ নভেম্বরের মধ্যে পাঁচ দফা দাবি মানা না হলে যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানেরও হুঁশিয়ারি দেয় দলগুলো। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ১৬ নভেম্বর রবিবার সকাল ১১টায় আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে আলফালাহ মিলনায়তনে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন হবে। তার আগে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মোকাবিলায় মাঠে থাকবে এনসিপি: গণঅভ্যুত্থানে পতিত শেখ হাসিনার গণহত্যা মামলার রায়ের দিনক্ষণকে ঘিরে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সতর্ক অবস্থানে এনসিপি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে নামলে তাদের মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক কর্মসূচি দিয়ে থাকবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির শীর্ষ একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও তারা মাঠে নামলে গণঅভ্যুত্থানের দল হিসেবে এনসিপি ঘরে বসে থাকবে না। ফ্যাসিস্টরা যাতে গণহত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত এবং দেশে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য তৎপর রয়েছে।

এদিকে জুলাই আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিক ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ১৩ নভেম্বর মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ১৩ তারিখ ফজর পড়ব আমরা শাহবাগে। এক হাতে থাকবে লিফলেট, অন্য হাতে বাঁশের লাঠি। সারাদিন রাজপথে ভোটারযোগ করব আর খুনিলীগের গুন্ডাগুলারে খুঁজব। তিনি বলেন, দিল্লির জঙ্গিগুলারে কোথাও এক মিনিটের জন্য পাওয়া মাত্রই ওদের পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আমাদের সঙ্গে থাকবেন শহীদ পরিবার ও আহত ভাই-বোনেরা। তিনি বলেন, দেশ ধ্বংসের জন্য কয়েকশ কোটি টাকা বাজেট করেছে ফেরাউসিনা। আপনারাও কয়েকশ কোটি বাঁশের লাঠি নিয়ে তৈরি হোন। আজাদীর এই জমিনকে আমরা আর জাহান্নাম হতে দিব না। ইনশাআল্লাহ।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/cfx6
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন