বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তার মালিকানা ফিরে পেতে চায়। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। সেই জনগণই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কিংবা ক্ষমতায় যাবে। সেখানে কোন দল কী বলল এগুলো এখন দেখার বিষয় নয়।
সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক শোতে তিনি এসব কথা বলেন।
নিপুণ রায় বলেন, ‘সঠিক সময় সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন না হওয়ার কারণে ফ্যাসিবাদ তার সকল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে জনগণের বিরুদ্ধে। জনগণের এই ১৭ বছরের পুঞ্জিত ক্ষোভ, ঘৃণা এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে রাজপথে নেমে আসায় এর শেষটা হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। সেখানে ছাত্র জনতা, সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল এবং জনগণ স্বতংফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, এক দফার দাবি শেখ হাসিনার পতন। সেই জায়গায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দেড় হাজারের অধিক জনগণ শহিদ হওয়ার পর আমরা একটি স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। এর মূল লক্ষ্যটা কী? আমার অধিকার ওই ফ্যাসিবাদ ভূলুণ্ঠিত করেছিল; কুক্ষিগত করেছিল। ফ্যাসিবাদের হাত থেকে, শোষণ নির্যাতন নিপীড়নের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য কিন্তু এই আন্দোলন। এই আন্দোলনে কোনো একক ব্যক্তি, দল কিংবা মানুষ জড়িত না, এখানে সকল জনগণ জড়িত। লক্ষ্য একটাই, অধিকারপূর্ণ প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ। এই গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ হচ্ছে নির্বাচন। বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তার মালিকানা ফিরে পেতে চায়। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। সেই জনগণই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কিংবা ক্ষমতায় যাবে। সেখানে কোন দল কি বলল এগুলো এখন দেখার বিষয় নয়। এখন জনগণসহ সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ট্রেনে যাত্রা শুরু করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তবর্তীনকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আরো আগে যদি নির্বাচনের ডেটটা ডিক্লেয়ার করতেন তাহলে দেশের পরিস্থিতি যতটা নাজুক হয়েছে এতটা নাজুক কিন্তু হতো না। এখন যারা বলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না তাদের নিজস্ব কর্মকাণ্ড, তাদের এই কয়দিনে যে দৌরাত্ম্য কিংবা তাদের যে কথাবার্তা ভঙ্গিমা তারা আসলে জানে না রাজনীতি কোন ধারায় প্রভাবিত হয় বাংলাদেশে। রাজনীতি করতে হলে আপনাকে জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের পালস বুঝতে জনগণের জন্য সর্বোচ্চ স্বার্থ ত্যাগ করে কিন্তু আপনাকে রাজনীতির নেতৃত্ব দিতে হবে। যে সকল দল বলে যে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না কিংবা বিভিন্ন ধরনের থ্রেট দিয়ে বক্তব্য দেয় তাদের একক নেতৃত্বে কিন্তু বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয় নাই। দীর্ঘ ১৭ বছরে বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিকী রাজনৈতিক দল বিভিন্ন মতের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছে, সংগ্রাম করেছে, ঘুম হয়েছে, খুন হয়েছে, মিথ্যা মামলা জর্জরিত হয়েছে। মুষ্টিমেয় কোনো ষড়যন্ত্রের সাথে আঁতাত করে কেউ যদি দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করতে চায় তার জন্য গণতান্ত্রকামি সকল জনতা, দল সেটা প্রতিরোধ করবে।’