English

29 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

দেশ চালানোর মতো অর্থ ফুরিয়ে আসছে: রিজভী

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, চারদিকে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ, আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। আর্থিক খাত পঙ্গু হয়ে গেছে। দেশ চালানোর মতো অর্থ ফুরিয়ে আসছে। ডলারের রেট প্রতিদিন বাড়ছে।

আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে খোলা মুদ্রাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম প্রথমবারের মতো শত টাকা ছাড়িয়ে গেছে। খোলা বাজারে ১ ডলার ১০২ টাকায় কেনা এবং ১০৩.৫৯ টাকায় বেচা হচ্ছে। তেল মজুদের মতো ডলার নিয়েও খেলা শুরু করে দিয়েছে সরকারের সিন্ডিকেট।

তিনি বলেন, দেশের টাকার মানের অব্যাহত পতনে আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। অর্থনীতি বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটা খাতেই ধ্বস নামবে। নিত্যপণ্যের নজিরবিহীন দাম বৃদ্ধি হবে, মোট জাতীয় সঞ্চয় কমে আসবে। বৈদেশিক রিজার্ব কমে যাবে। তৈরি পোষাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে বাংলাদেশ দেউলিয়ার পর্যায়ে চলে যাবে।

রিজভী বলেন, গত ১২ মে পর্যন্ত ডলারের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫.১১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। তবে আগের বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রায় ১৭% কমে যাওয়া এবং উচ্চ আমদানি প্রবৃদ্ধির কারণে ডলারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। বেশি দামে ডলার কিনে পণ্য আমদানি করায় সবশ্রেণির পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পণ্যের মূল্যের ওপর। আবার এখন যে পণ্য বাড়তি মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে তার প্রভাব সামনের মাস ও পরের মাসে পড়বে। ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে এটাই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ৮ মাসে রিজার্ভের ৪৮ বিলিয়ন ডলারের যে হিসাব দিচ্ছে সরকার তা ৪২ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। পরের ২ মাসে এটা আরো ৪ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। আমাদের আমদানি-রপ্তানির বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত বাড়ছে। রেমিট্যান্স কমছে। রিজার্ভ বিপজ্জনক লেভেলে চলে আসছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ৫০ শতাংশের ওপরে চলে যাচ্ছে। কেবল লুটপাটের জন্য তুঘলকি মেগা প্রকল্প আর ইচ্ছেমতো বৈদেশিক ঋনের ফাঁদেই এই বিনা ভোটের শেখ হাসিনার সরকার দেশকে দেউলিয়া করে শ্রীলঙ্কার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক জানেন এই সরকারের আমলে প্রকল্প মানেই মহা দুর্নীতি। যেই সরকারের আমলে সুঁই-সুতা-কিংবা কাঁথা-বালিশ কিনতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয় তাদের আমলে পদ্মা সেতু করার নামে হাজার-হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ দশ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সড়ক সেতু নির্মাণে নানা অজুহাতে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

রিজভী বলেন, গর্ব করে বলা হয়েছিল নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হচ্ছে। অর্থাৎ জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু করা হচ্ছে। মোবাইল ফোনের কলরেট থেকেও সরকার টাকা নিচ্ছে। গতকাল দেখলাম পর্বতপ্রমাণ টোল হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এখন জনগণের পকেট কেটে জোর করে টাকা নিয়ে সেতু বানিয়ে সেই সেতু পারাপারের জন্য আবার দীর্ঘকাল জনগণের পকেট কাটা চলতে থাকবে। কেবল পদ্মা সেতু নয় ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, টানেল, বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ প্রতিটি মেগা প্রজেক্টে হরিলুট হচ্ছে। আর দেশ ধাবিত হচ্ছে শ্রীলংকার মতো দেউলিয়াত্বের দিকে।

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে, টাকা পাচার করেছে, ক্ষমতার লোভে হাজার-হাজার মানুষকে গুম খুন অপহরণ করেছে, দুই চার বছর মন্ত্রী থাকার জন্য তাদের মুখে প্রতিদিন বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার নির্লজ্জ কুৎসা রটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

রিজভীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী এবং ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি এবং টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত এটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এবার ব্যাপকভাবে দুদক কেন তাদের দুর্নীতি এবং টাকাপাচারেরের তদন্ত শুরু করছে না, আর এ কারণেই আগামী দিনে দুর্নীতিবাজ আর টাকা পাচারকারীদের সহযোগী হিসেবে দুদককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কারণ আওয়ামী সরকার মৃত্যুঞ্জয়ী নয়, এদের পতন আসন্ন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিপজ্জণক বিদ্রোহের মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। অটলভাবে একত্রিত হয়ে জনগণের একটা জাতীয় বিষ্ফোরণ হতে যাচ্ছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের অপ্রতিরোধ্য গণদাবিকে বিজয়ের পথে চালিত করতে জনগণ এখন সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন