জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, এনসিপি চাঁদাবাজের অভয়াশ্রম হবে না। কিন্তু দেখা গেছে, চাঁদাবাজির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কিছু নেতা আটক হয়েছেন, সমালোচিত হয়েছেন, অনেকের বিরুদ্ধে তদন্তও হচ্ছে।
এনসিপির কয়েক জন নেতা গত কয়েকমাসে নানা ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন। যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে গত এপ্রিলে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। ঢাকার ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে মব হামলার পর আটকদের থানা থেকে ছাড়িয়ে এনে আলোচনায় এসেছিলেন এনসিপির আরেকজন নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদ। গত বছর অগাস্টের পর থেকে সারাদেশেই সমন্বয়ক পরিচয়ে ক্ষমতা প্রদর্শন, চাঁদাবাজি, তদবিরসহ নানা অভিযোগ আসতে থাকে।
তবে এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন হাসনাত। সোমবার যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই ধরণের (চাঁদাবাজির) কয়টা উদাহরণ আছে? কদিন আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি ঘটনা সামনে এসেছে। এখন এনসিপি আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম কিন্তু এক না। এটা ওপেন প্লাটফর্ম ছিল। এখান থেকে কেউ ছাত্রদলে গেছে, শিবিরে গেছে, কেউ এনসিপিতে যোগ দিয়েছে। তো ওই প্লাটফর্মের কেউ যদি দুর্নীতিতে জড়ায়, সেটার দায় কি শুধু এনসিপির? এই দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলানো উচিত।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটা সর্বজনীন প্লাটফর্ম হিসেবে অপারেট করা হয়েছে। এখন সেই জায়গাতে এনসিপি বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে অংশটা রাজনৈতিক দল করতে আগ্রহী ছিল, তাদের নিয়ে এনসিপি গঠিত হয়েছে। এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসছে, সেই বিষয়ে তদন্তও হচ্ছে। এটার দায় যদি কোনোভাবে এনসিপিকে দেওয়া হয়… এটা একটা মিডিয়া ফ্রেমের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এটা প্রমানিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি এসময় বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর চাঁদাবাজির বিষয়টি সামনে আনেন, ‘বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো যে পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছে বা দখলদারি করেছে, সেটা সম্পর্কে মত কি? একটা ঘটনা আছে এনসিপির। ওই ঘটনাকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা অনেক রাজনৈতিক দলের মিডিয়া দখল, ব্যাংক দখলের কাছে… আমি তুচ্ছের কথা বলছি না। এটাও হওয়া উচিত না। আমাদের যেটা হয়েছে সেটাও হওয়া উচিত না। আমি এটাকে লাইট করার চেষ্টা করছি না। কিন্তু আপনি কি জানেন এই যে আলোচিত ঘটনা এটা কিন্তু আমাদের কাছ থেকেই গেছে। আমরাই চেয়েছি। যখন অভিযোগ আসছে আমরাই থানাতে অভিযোগ দিয়েছি। বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নেন। রাজনৈতিক শেল্টার দেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। সেখানে দেখেন আমাদের রাজনৈতিক দল এই বিষয়টি কিভাবে দেখছে।’
