English

27.6 C
Dhaka
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫
- Advertisement -

ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে গলার রশির যত্ন নিন: ফুয়াদ

- Advertisements -

আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের ওপর হামলার বিচার না হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

তিনি বলেন, ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে নিজেদের গলার রশিটার যত্ন নিতে হবে। মাথায় রাখবেন—নুর শুরু, নুর দিয়ে শেষ হবে না।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে আহত নূরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

ফুয়াদ বলেন, আমরা খুবই হতাশ। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে যা যা করার, সব করছেন। আওয়ামী লীগের নামে করছেন, যা আসলে আওয়ামী লীগের সময়ের কাজ ছিল—গুম, খুন, হত্যার বিচার না হওয়া। আজও একই অবস্থা চলছে।

আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলছি—যদি দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হয়, তবে আপনাদের অনেক উপদেষ্টাদের নাম ইতোমধ্যেই এসাসিনেশনস প্ল্যানের তালিকায় আছে। তাদের লাশও কয়েকদিন পর পড়বে। তখন বিচার করার মতো মানুষও থাকবে না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত সপ্তাহে যৌথবাহিনী ও পুলিশ নির্মমভাবে নুরের ওপর হামলা চালিয়েছে জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে ও তার নিজস্ব কার্যালয়ের সামনে। এখন কিছুটা স্থিতিশীল হলেও তিনি গুরুতর অসুস্থ। নাকের হাড় ভেঙে যাওয়ায় দম নিতে কষ্ট হচ্ছে, মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হচ্ছে, ঘুমাতে পারছেন না। ওটি করে রক্ত পরিষ্কার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

একই ঘটনার শিকার ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানও গুরুতর আহত বলে জানান তিনি।

ফুয়াদ বলেন, যৌথবাহিনী ও পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। কোমরের হার ডিসপ্লেস হয়ে গেছে, হাঁটতে পারছে না। পা ও কোমরে গুরুতর চোট লেগেছে। সেও দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হবে।

হামলার এক সপ্তাহ পার হলেও কোনো অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবি পার্টির এ নেতা।

তিনি বলেন, যারা কমান্ড দিয়েছে—সিনিয়র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, মেজর জেনারেল—তাদের কাউকেই সাসপেন্ড করা হয়নি। সেনাবাহিনীতে এখনো আয়না ঘরের সেই ক্রিমিনাল নেটওয়ার্ক আছে। তাদের অনেকে জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরের আত্মীয় হয়ে সুবিধা নিচ্ছে।

ফুয়াদ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করছে, বিদেশে পাঠানোর কথা বলছে। প্রকৃত কাজটা করেনি—২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী পুলিশ সদস্য ও যৌথবাহিনীর সদস্যদের স্ট্যান্ড রিলিজ করা উচিত ছিল। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সম্পূর্ণ অযোগ্য, অপদার্থ ও ইউজলেস বলছি। তাদের ফেলে দেওয়া দরকার ছিল। তারা প্রতিদিন গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে অন্যায় ও বেইমানি করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, নূরের ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, বরং একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা ইতিমধ্যে খবর পাচ্ছি, এস আলমের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে হাইপ্রফাইল এসাসিনেশনের পরিকল্পনা হয়েছে। এর সঙ্গে ‘র’, আওয়ামী লীগ ও দিল্লিভিত্তিক শেখ হাসিনা কাজ করছে। বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার নামও সেই তালিকায় আছে। দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, তাদেরও টার্গেট করা হচ্ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, নূরের ওপর হামলাকে আমরা কোনো সাধারণ রাজনৈতিক সহিংসতা হিসেবে নিচ্ছি না। এটি দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি লম্বা ষড়যন্ত্রের অংশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত এখনই কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা একা মিলে গত ১৬ বছরে দিল্লির আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হতো না। এ কাজে জাতীয় পার্টিই ছিল মূল হাতিয়ার।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ২০১৪ সালে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং এসে কিভাবে জাতীয় পার্টিকে দিয়ে নির্বাচন করিয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচন হোক বা ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন—প্রতিটি নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় পার্টি জড়িত ছিল।

জিএম কাদের ও তার দলের ভূমিকা প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, জিএম কাদের আপাদমস্তক ভারতকেন্দ্রিক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি তার দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাকিব রহমানকে কোনো নোটিশ ছাড়া সরিয়ে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে জিএম কাদের নিজেই বলেছেন, এটি ভারতের হাইকমিশনের নির্দেশে করা হয়েছে। একটি দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদককে ভারতের নির্দেশে বরখাস্ত করা হলে, সেই দল বাংলাদেশের দল হতে পারে না। বরং সেটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।

তিনি বলেন, আশির দশক থেকে জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নয়, বরং বিপক্ষে কাজ করছে। এরশাদ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করেছে।

অতএব কোনোভাবেই জাতীয় পার্টিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলা যায় না। যারা বাংলাদেশপন্থী নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের কোনো অধিকার থাকতে পারে না, এমনকি নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও অধিকার নেই।

এবি পার্টির এই নেতা দাবি করেন, আমরা গত এক বছর ধরে বলে আসছি—জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের স্বার্থে কাজ করে না। আমাদের সেই বক্তব্য এখন বারবার সত্য প্রমাণিত হচ্ছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/s2e2
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন