English

34 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে অ-সুখের, অধঃপতন হচ্ছে সুখের: গোলাম মোহাম্মদ কাদের

- Advertisements -

বিশ্বের ১৪৩টি দেশের মধ্যে এবার সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯ তম। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১১৮ তম এবং ২০২২ সালে এই অবস্থান ছিলো ৯৪। মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থ্যতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, উদারতা, জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রা বিবেচনা করে প্রতিবছর জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ২০২২ সালে সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ পিছিয়েছে ২৪ ধাপ। আর ২০২৩ সালে ১১ ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ। সুখী দেশের তালিকায় ২ বছরে বাংলাদেশ পিছিয়েছে ৩৫ ভাগ। সুখ থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে যাচ্ছি তা এই রিপোর্ট থেকেই প্রমাণ হয়।

এই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিবেশী নেপাল (৯৩), পাকিস্তান (১০৮), মিয়ানমার (১১৮), ভারত (১২৬) ও শ্রীলংকার (১২৮) তম স্থানে। প্রতিবেশী সব দেশের থেকেই পিছিয়ে আছি আমরা। স্বাভাবিক কারনে, আফগানিস্থান ১৪৩ তম হয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, যেভাবে অধঃপতন হচ্ছে এ রকম চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসাবে গন্য হতে পারি, আশংকা আছে।

আজ বিকেলে এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।

সুখের অভাব হয় দেশের মানুষের যখন সুশাসনে অভাব হয়। সুশাসনের অর্থ আইনের শাসন এক কথায় আইনের চোখে সকলেই সমান। দ্বিতীয় বিষয়টি সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ বা বৈষম্যহীন সাম্যের ভিত্তিতে চলা দেশ। এই দুইটি সম্ভব হয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার, গণতন্ত্রের বা জনগনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।

Advertisements

কেননা এ পদ্ধতিতেই শুধুমাত্র সব স্থরের সকল ধরনের জনগন জবাবদিহিতার আওতায় থাকে। বর্তমান দেশে গণতন্ত্রের চর্চ্চা নেই। সরকারকে জবাবদিহিতা করার কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলশ্রুতিতে, দেখা যাচ্ছে সার্বিকভাবে দেশে প্রায় সকল পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব। স্বজন প্রীতি আর দলীয়করণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।

সুশাসন নেই কোথাও। একারণেই দেশের মানুষ তাঁর প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ আসন পর্যন্ত কোথাও জবাবদিহিতা নেই। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়না, তাই বেড়েই চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতি।

২০২৩ সালে সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ৫৬২৪। দেশের মানুষের জীবনের যেনো কোন দাম নেই। জীবনের নিরাপত্তা নেই কোথাও। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কোন প্রতিকার নেই, কারো যেনো কোন দায় নেই। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটবে আর মানুষ মারা যাবে এটাই যেনো স্বাভাবিক ঘটনা। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১.২ শতাংশ। গত বছর অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে মটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ৫৭২টি, ভারী যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ২৫টি। এছাড়া নৌ দূর্ঘটনা ঘটেছে ১০৭টি।

নিহত হয়েছেন ১৪৮ জন। আহত হয়েছেন ৭২ জন। নিখোঁজ হয়েছেন ৪৬ জন। রেলপথ দূর্ঘটনা ঘটেছে ২৮৭টি। নিহত হয়েছেন ৩১৮জন। আহত হয়েছেন ২৯৬জন। (সূত্রঃ বণিক বার্তা জানুয়ারী ২৮, ২০২৪)।

এখন প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে প্রতিবছর শতশত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে ভয়াবহ আগুনে। পুরো দেশটাই যেন অগ্নি ঝুঁকিতে। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, গেলো বছর ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকান্ডে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছেন ১০২ জন আর আহত হয়েছেন ২৮১ জন। যদিও সাধারণ মানুষের ধারনা এই সংখ্যা আরো বেশি। এ্টাই আংশকার বিষয়।

দুর্নীতির বিস্তার অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। টিআই বলেছে, তালিকায় সর্বোচ্চ ১০০ স্কোরের মধ্যে ২৪ স্কোর পেয়ে স্কোর প্রাপ্তির ক্রমানুসারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম। আগের বছর ১৪৭তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ দুর্নীতির বিস্তার লাভ করছে প্রতিদিন।

টি আই-এর প্রতিবেদন অনুসারে দক্ষিন এশিয়ার দেশ গুলির মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানীস্থানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন। ভারত, পাকিস্থান, শ্রীলংকাসহ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ দুর্নীতির হার বেশি। দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটানের স্কোর ৬৮, ভারত ও মালদ্বীপের ৩৯, নেপালের ৩৫, শ্রীলংকার ৩৪, পাকিস্থানের ২৯ এবং আগফানিস্থানের ২০।

Advertisements

অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। এ মুহুর্তের উদাহরন।

সরকার রমজান মাসকে সামনে রেখে ২৯টি নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্য নির্ধারন করে দেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের ২৪-০৩-২০২৪ তারিখের রিপোর্ট অনুযায়ী সরকার কর্তৃক বেধে দেয়া ২৯টি পন্যের কোনটিই নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে না। ভোক্তাদের অভিযোগ, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। সরকারের আশ^াসে আর মানুষের বিশ^াস নেই। সরকার চাল, ডাল, চিনি, পিঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। কিন্তু বাজারে ঐসব পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে অনেক বেশি। মনে হচ্ছে সরকারের কথা কেউ শোনেনা। আবার, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে কিছু খুচরা ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। যারা প্রতিকেজি পণ্যে পঞ্চাশ পয়সা ব্যবসা করে সেই ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানা করা হয়। কিন্তু, যারা সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন সরকার কী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি? সরকার কী সিন্ডিকেটকে ভয় পায়? নাকি সিন্ডিকেটের সদস্যরাই সরকার পরিচালনা করে? সাধারণ মানুষ জানতে চায় সিন্ডিকেটের সাথে সরকারের কী সম্পর্ক ?

কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজী থেকে মানুষ মুক্তি চায়। সরকার সমর্থকদের ছত্র ছায়ায় কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক মদদে কিশোর গ্যাং নামে উঠতি কিশোরদের জীবন ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। যারা কিশোর গাং সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে।

আমরা সে উন্নয়ন চাই না, যার কারনে অ-সুখের উন্নতি হয়। আমরা সেই উন্নয়ন চাই যাতে সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ হয়।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন – প্রেসিডিয়াম সদস্য – হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন,এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ,শেরিফা কাদের, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ,
ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুর রহমান খান,সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব- গোলাম মোহাম্মদ রাজু,মোঃ সামছুল হক, মোঃ বেলাল হোসেন,আব্দুল হামিদ ভাসানী, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য – নির্মল চন্দ্র দাস,মোঃ হেলাল উদ্দিন,এম এ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন,মিজানুর রহমান মিরু, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক – মোঃ হেলাল উদ্দিন,আকতার হোসেন দেওয়ান, আজাহারুল ইসলাম সরকার,এম এ সোবহান, এডভোকেট আবু তৈয়ব,মাহমুদ আলম,সমরেশ মন্ডল, সামসুল আলম লিপ্টন, কেন্দ্রীয় নেতা -রেজাউল করিম, লোকমান ভুঁইয়া রাজু, মাহবুবুর রহমান খসরু,মিনি খান, নূরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম, আলতাফ হোসেন মন্ডল, আবুল কালাম আজাদ, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, এডভোকেট আবু ওয়াহাব, মোঃ মশিউর রহমান বাবু, শফিকুল আজম মুকুল, আলহাজ্ব মোঃ শাজাহান মিয়া, জাতীয় ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন