English

29 C
Dhaka
বুধবার, জুন ১৮, ২০২৫
- Advertisement -

বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আ. লীগকে দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল

- Advertisements -

একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল কায়েম, গণতন্ত্র ধ্বংস ও নির্যাতন করায় দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। তরুণ রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ার লক্ষ্যে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই সমাবেশ যৌথভাবে আয়োজন করে বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি।

কারণ হাসিনা পালিয়েছেন। কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনো আছেন, তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছেন। বাংলাদেশে আবার তাদের রাজত্ব কায়েম করবার ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু তারা তা পারবেন না।
দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা যাদের এখন দায়িত্ব দিয়েছি, এই দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, তারা সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না। ফলে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সমস্যাগুলো তাদের (ফ্যাসিস্টদের) শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এই সমাবেশ করছি তখন ঢাকায় আরেকটি সমাবেশ হচ্ছে, দাবি করা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা যারা মাঠে আছি শুধু তারাই নই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। কারণ এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে দেশের মানুষকে নির্যাতন করে এসেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এক দলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।
দেশের সংস্কার প্রথম জিয়াউর রহমানই শুরু করেছিলেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল, শুধু চারটা পত্রিকার খোলা রেখেছিল। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা সেদিন ছিল না। অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছিল। সেই অর্থনীতি, সংবাদপত্র শহীদ জিয়াউর রহমান মুক্ত করে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কথা বলেন, দেশের প্রথম সংস্কার করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি এক দলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছেন। যিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, অর্থনীতিকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। আজকে দেশের যে অর্থনৈতিক ভিত্তি, গার্মেন্টস ও দেশের বাইরে শ্রমিক পাঠানো শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আর আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৯টি বছর দেশের পথেঘাটে ঘুরে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি আমাদের পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি দিয়েছেন।’

সমাবেশে চট্টগ্রামের সন্তান ও ছাত্রদল নেতা শহীদ ওয়াসিম আকরাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে আবু সাঈদ আছে ভালো লেগেছে, মুগ্ধর নাম আছে ভালো লেগেছে। কিন্তু চট্টগ্রামের ওয়াসিম আকরামের নাম না থাকায় আমরা দুঃখিত হয়েছি। পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করে তার নাম যুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমার সবাই অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। সেই গণতন্ত্র যেন কারো কাছে জিম্মি হয়ে না পড়ে, সে জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে, কারো স্বার্থ আদায় করা সম্ভব হবে না। তাদের যদি কোনো কর্মসূচি থাকে, দর্শন থাকে তা নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। বাংলাদেশে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এই নির্বাচন কেউ বানচাল করতে পারবে না। আপনাদের সবাইকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। গণতন্ত্রের পথ কেউ যেন রুদ্ধ করতে না পারে। আপনাদের কোনো ধরনের উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমাদের সহনশীল হতে হবে। একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে হবে।’

সমাবেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফিউল আলম বলেন, ‘আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। আমার ছেলের সঙ্গে সব হত্যার বিচার চাই। ১৭ বছর ধরে আমরা মিছিল-মিটিং করতে পারিনি। কোথাও করতে দেওয়া হয়নি। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের পাশে আছেন। আমাদের খোঁজখবর রাখেন তারা।’

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট খেলোয়াড় তামিম ইকবাল বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে খেলোয়াড় পাচ্ছি না, এই উত্তর আসলে সবাইকে দিতে হবে। জাতীয় দলে অমুকের কারণে খেলতে পারিনি, তমুকের কারণে খেলতে পারিনি, এটা স্পোর্টসম্যানের কথা হতে পারে না। স্পোর্টসম্যানের কথা হবে, হয়তো আমার ভুল ছিল, এই কারণে জাতীয় দলে যেতে পারিনি। আজ থেকে ১০ কিংবা ২০ বছর আগে, অনেকেই চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্পোর্টসে প্রতিনিধিত্ব করত। আশা করছি, আমরা আবারও ওই জায়গাটা ফেরত পাব। ভবিষ্যতে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ফুটবলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্পোর্টসে চট্টগ্রাম থেকে আরো খেলোয়াড় পাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘আপনারা জানেন আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, একটা অঘটন হয়েছিল, মাত্র রিকভার করছি। আপনাদের এত ভালোবাসা দেখে আমি খুবই খুশি। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে। ভালো থাকবেন।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, হারুনুর রশিদ হারুন,  চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন