আগামীতে যদি ড. ইউনূস শাহাবুদ্দিনের আমলের চেয়েও ভালোভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে না পারেন, তবে সেই ব্যর্থতার দায়ভার তার (ড. ইউনূসের) ওপরই বর্তাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক গোলটেবিল আলোচনায় এ মন্তব্য করেন জয়নুল আবদিন ফারুক।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক আরও বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট, তবে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষিত হলে তিনি আরও আশ্বস্ত হবেন।
নির্বাচনে ‘অতীতের কলঙ্কিত’ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি জানিয়ে ফারুক বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার লটারির মাধ্যমে এসপি ও ওসি বদলির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের নাম যেন লটারির তালিকায় না থাকে।
তিনি আরও বলেন, যাদের কারণে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে, কলঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সেইসব কর্মকর্তারা যেন আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দায়িত্ব না পান।
এ সময় তিনি প্রশ্ন করেন, যারা হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল, তারা এখনো কি পুলিশের দায়িত্বে আছেন?
বক্তব্যে ফারুক তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি মর্মান্তিক ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে কারাবন্দি অবস্থায় তার মা মারা যান, কিন্তু প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ায় মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখা সম্ভব হয়নি। তিনি তার প্রয়াত বন্ধু শাহজাহান সিরাজের একটি কথা স্মরণ করে বলেন, “রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে অনেক কিছু হারাতে হয় এবং সবকিছু ভুলে যেতে হয়। ”
ফারুক তার পুরোনো একটি মন্তব্যও পুনরুল্লেখ করেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, শেখ মুজিব যুদ্ধ দেখেননি, বুদ্ধিজীবী হত্যার কান্নাও দেখেননি। তার উচিত ছিল জ্ঞানী ও গুণীজনদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা।
তিনি বলেন, রাজনীতি ব্যক্তিগত সম্পদ নয়, এটা জনগণের।
তার মতে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সৎ রাজনীতির প্রচলন করেছিলেন এবং খালেদা জিয়া হচ্ছেন ‘আপসহীন নেতৃত্ব’।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যদি তিনি দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস না করতেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল না করতেন এবং বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা না দিতেন, তবে আজ হয়তো তাকেই পালিয়ে যেতে হতো না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিলের সভাপতি আলী আশরাফ আখন্দ। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।