বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, আজ আমাদের আবারও স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। কারণ আজও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের উদ্যোগে ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুস সালাম বলেন, ৭ নভেম্বরের চেতনা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যদি ৭ নভেম্বর না হতো, তাহলে আমরা সেদিনই আমাদের স্বাধীনতা হারাতাম। গণতন্ত্র তো আগেই হারিয়েছিলাম। কাজেই বাংলাদেশের মূল চেতনা যদি বলি, তাহলে সেটা হলো ৭ নভেম্বরের চেতনা।
তিনি বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সময় আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিল—কী কারণে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, কী কারণে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। মনে হয়েছিল, যেন একটি রাষ্ট্রকে খুশি করার জন্যই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অনেকে বলে থাকেন, পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হয়েছিল ভারতের স্বার্থে; কিন্তু সেটি সত্য নয়। আমরা যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম দেশের স্বাধীনতার জন্য, কারও পরাধীন হওয়ার জন্য নয়। কিন্তু সেই সময় আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছিল। যখন বাংলাদেশকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই ৭ নভেম্বরের উদ্ভব হয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোনো মার্শাল ল বা ক্যু করে ক্ষমতায় আসেননি। সেই সময়ে দেশের সৈনিক ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে বিপ্লব সংঘটিত করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন।
আব্দুস সালাম বলেন, অনেকে বিপ্লব ও অভ্যুত্থানকে এক করে দেখেন, কিন্তু এ দুটি এক নয়। বিপ্লব হলে একটি দেশের সম্পূর্ণ চেহারা বদলে যায় এবং তখন তাই হয়েছিল। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আসলে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। দরিদ্র মানুষের মুখে আহার তুলে দিয়েছিলেন, বস্ত্রহীন মানুষের গায়ে বস্ত্র পরিয়েছিলেন, সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে অনেকে বোঝা ভাবতো, কিন্তু জিয়া প্রমাণ করেছিলেন মানুষই শক্তি। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা শক্তিকে দেশ গঠনে ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। সেই শক্তিকেই জিয়াউর রহমান কাজে লাগিয়ে দেশ গড়েছিলেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন মহান সংস্কারক। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে তিনি সংস্কার করেননি। তিনি প্রশাসন, অর্থনীতি, কৃষি, পররাষ্ট্রনীতি—সবখানেই নবজাগরণ এনেছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
