বন্যায় এশিয়ার চার দেশ- ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় প্রাণহানি দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যেই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় নতুন বৃষ্টিতে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ায় শত শত মানুষ নিখোঁজ
সুমাত্রা দ্বীপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি প্রদেশে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মধ্যম থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া বিভাগ। গত রাতে বৃষ্টি শুরু হলেও এখনো তা গত সপ্তাহের মতো ভয়াবহ হয়ে ওঠেনি।
নতুন তথ্য–উপাত্ত আসার পর ইন্দোনেশিয়ায় মৃতের সংখ্যা সামান্য কমে ৭৭৬ দেখানো হয়েছে। তবে ৫৬০ জনের বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় নিখোঁজদের খোঁজ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
উত্তর সুমাত্রার পানদান এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ৫৪ বছর বয়সী সাবানদি বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি। আবার বৃষ্টি শুরু হলে বন্যা ফিরে আসবে, এই আতঙ্ক ছাড়তে পারছি না।’
ইন্দোনেশিয়ায় বন্যার মধ্যে জ্বালানি সংকটও তীব্র আকার নিয়েছে। কোথাও কোথাও খাদ্য সংকট, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং লুটপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
শ্রীলঙ্কায় বৃষ্টির আতঙ্ক
শ্রীলঙ্কায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে উত্তর–পূর্ব মৌসুমি বর্ষণ শুরু হতে পারে। এর কারণে কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি এলাকায় ফের ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
অনেক এলাকার বাসিন্দাদের এখনো বাড়িতে না ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ অতিরিক্ত ভেজা ঢালগুলো একটু বৃষ্টি হলেই ধসে পড়তে পারে।
কলম্বো থেকে ক্যান্ডি যাওয়ার প্রধান সড়ক আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ১৫ ঘণ্টা যান চলাচলের অনুমতি মিলছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিকল্প রাস্তাগুলো দিয়েও যানবাহনগুলো খুব ধীরে চলতে বাধ্য হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৭৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকশ মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুনর্গঠনে ৭০০ কোটি ডলার পর্যন্ত লাগতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে থাকা শ্রীলঙ্কার জন্য এই দুর্যোগ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ায় বন্যা
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ২৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একাচাই পিয়েনস্রিওয়াচারা জানিয়েছেন, গত মাসের শেষের দিকে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় দেশেটির দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে আটটি প্রদেশে কমপক্ষে ২৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মারা গেছেন পর্যটন কেন্দ্র হাট ইয়ে জেলায়।
এছাড়া মালয়েশিয়ায় সাম্প্রতিক বন্যায় অন্তত তিনজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয় প্রায় ৩৪ হাজার মানুষকে।
