English

28 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

নাচ-গান আর গাঁজা সেবনের মধ্যে দিয়েই চলছে মহাস্থান গড়ে গঞ্জিকাসেবীদের মিলন মেলা

- Advertisements -

রশিদুর রহমান রানা শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি: বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যেদিয়ে পালিত হল মহাস্থানে গঞ্জিকাসেবীদের মহা মিলন মেলা। ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে হযরত শাহ সুলতান বলখী (রঃ) এর বিজয় দিবস বা বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার।

যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যেদিয়ে পালন হওয়ার কথা থাকলেও, পুলিশ প্রশাসনের কোন বাধাই তারা মানেনি। নাচ গান আর গাঁজা সেবনের মধ্যে দিয়েই কেটে গেল বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার। প্রতি বছরের ন্যয়, পুন্ড্র বর্ধনের রাজধানী প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহন হিন্দু-মুসলিমদের তীর্থ স্থান, উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে হযরত শাহ্ সুলতান বল্খী মাহীসওয়ার (রঃ) এর মাজার এলাকায়,বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এ মেলা বসে।

মহামারী করোনার কারণে গত দুই বছর এই মেলা হয়নি। ঐহিতাসিক মহাস্থান গড়ে হাজার হাজার নারী পুরুষের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পালিত হলো গাঁজা সেবীদের মিলন মেলা। দিন শেষে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মহাস্থান গড়ে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহমুদ মাহীসওয়ার (রঃ) এর মাযার ও এর আশপাশের এলাকায় শরিয়ত, মারিফত, তরিকত, হাকিকত, মুরশীদি, ভাওইয়া, ভাটিয়ালীসহ বিভিন্ন ধরনের গান নেচে গেয়ে রাত কাটিয়েছে ভক্তরা।

এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার জটাধারীদের আগমন ঘটে এখানে। জটাধারী নারী পুরুষ গানের ফাঁকে ফাঁকে মনের সুখে গাঁজার কলকিতে টান দেয় এবং ইল বাবা ইল ধিরে ধিরে গিল সহ বিভিন্ন ধরনের সিকলি বলে।

গাঁজার ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে মহাস্থান গড় এলাকার আকাশ বাতাস। এসব দৃশ্য দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার জনতা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এখানে। মহাস্থান এলাকায় গাঁজার ধুঁয়া বন্ধ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এবার শেষ বৈশাখিতে মহাস্থান গড় এলাকায় গাঁজা সেবন তথা সম্পূর্ন মাদকমুক্ত পরিবেশ এবং সার্বিক আইনশৃংখলা বজায় রাখতে সার্বক্ষনিক ম্যাজিস্ট্রেট, বিপুল পরিমান পোষাক ও সাদা পোষাকে পুলিশ, র‌্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দায়িত্ব পালন করেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাজার এলাকা সম্পূর্ন গাঁজা মুক্ত পরিবেশে এবারের শেষ বৈশাখ পালিত হচ্ছে। পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অত্যন্ত সতর্ককতার সাথে মহাস্থানে আগত হাজার হাজার মানুষদের তল্লাশী করা হয়েছে।

মহাস্থান গড় এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারা দিন ও রাতের কিছু অংশ গোটা এলাকা ছিল উৎসবমুখর। এলাকাবাসী জানান, প্রতিবছরের মতো এবারো হাজার হাজার জিয়ারতকারীরা পাশাপাশি জটাধারী পাগলা-পাগলী গঞ্জিকাসেবিদের আগমন ঘটে এই পুর্ণ্যভূমিতে। হাজার হাজার নারী পুরুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মহাস্থান মাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছিল ভক্তরা। মাজার-মসজিদ এলাকায় জিকির মিলাদ মাহফিল ও নফল নামাজ নিয়ে মুসুল্লিগণ ব্যস্ত থাকছেন। বৈশাখী উৎসব উপলক্ষ্যে মহাস্থানগড়ের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সহস্রাধিক স্থায়ী ও ভ্রাম্যমান দোকানী তাদের পসরা খুলে বসেছে। বিক্রিও হয়েছে প্রচুর।

মহাস্থানগড়ের ঐতিহ্যবাহী কটকটি ভান্ডার গুলিতে বিক্রি হয়েছে বেশ। আশেপাশের গ্রামগুলোতে জামাইদের আগমন ছিল লক্ষ্যণীয়। এ উপলক্ষে মাযারের বিশাল এলাকা জুড়ে মেলা বসেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। রাত যত বেশি হয় মানুষের স্রোত আরো বাড়তে থাকে। তবে বিকেল থেকেই মহাস্থান গড় এলাকা ও এর আশপাশে মূল মাজার এলাকা বাদ দিয়ে পাথর পট্টি,বোরহান উদ্দিনের মাজার,ডাক বাংলোর পিছনে,বাগান বাড়ী এলাকায় প্রকাশ্য গাঁজার আসর ও গাঁজা সেবনের জন্য কলকি এবং বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান বসে।

গত কয়েক বছর আগে থেকে মহাস্থান মাজার মসজিদ কর্তৃপক্ষ গাঁজা সেবনকারীদের মিলন মেলার পরিবর্তে এদিনকে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র.) এর বিজয় দিবস ঘোষনা করেছে। এদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মুসুল্লিদের রাতভর জিকির আজগার, মাজার জিয়ারত ও নফল ইবাদত করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ দীপক কুমার দাস বলেন, ঐতিহাসিক মহাস্থানের হযরত শাহ্ সুলতান মাহমুদ বল্খী মাহী সওয়ার (রহঃ) এর পবিত্র মাজার এলাকার পবিত্রতা রক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে আগত লোকজন নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন