English

26.3 C
Dhaka
রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

শিবগঞ্জে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত কাজে ব্যাস্ত গাছিয়ারা

- Advertisements -

উত্তরের জনপদ বগুড়ার শিবগঞ্জে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। আর কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে শীতের ভরা মৌসুম। তবে এরইমধ্যে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেজুর গাছের রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন এ অঞ্চলের গাছিরা।
শীত এলেই বেড়ে যায় শিবগঞ্জের গাছিদের কর্ম ব্যস্ততা এবং গাছিদের মাঝে খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য দা ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছের ছাল তোলা ও নলি বসানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আবার কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে রস সংগ্রহের কাজ।
উপজেলার প্রায় সব এলাকায় কমবেশি খেজুরের গাছ চোখে পড়লেও তুলনামুলক ভাবে মাঝিহট্ট এলাকায় খেজুর গাছ বেশি চোখে দেখা যায়। ওই এলাকার খেজুর রস দিয়ে উপজেলায় চাহিদার ৮০ শতাংশ পূরণ হয়।
সাধারণত বছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই ৪ মাস খেজুরগাছ থেকে মিষ্টি রস সংগ্রহ করা হয়। তবে কোন কোন সময় শীত আগে আসলে রস সংগ্রহও শুরু হয় আগেভাগে। এ রস অত্যন্ত সুস্বাদু ও মানবদেহের উপকারিতার কারণে যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে আছে। এখনও শীত এলেই শহর থেকে অনেক মানুষ ছুটে যান গ্রামে, খেজুর রস খেতে। রস ছাড়াও গাছিরা এ সময় রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালি তৈরি করেন। খেজুর রসের পাটালি গুড়ের পায়েশ না খেলে যেন শিতের আমেজটায় আসেনা। শীতে রস সংগ্রহের এই চার মাস এলাকার অনেক গাছিই খেজুরের রস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
এলাকার প্রবীন ব্যক্তিরা বলেন, কয়েক বছর আগেও এলাকার বিভিন্ন বাড়ির পাশে, ক্ষেতের আইলে ও রাস্তার দুই পাশ দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুরগাছ। এমনকি অনেক স্থানে একাধিক গাছ জন্ম নেওয়ায় সৃষ্টি হয়েছিল দেশি খেজুর বাগান। কিন্তু বর্তমানে ইটের ভাটা ও বিদেশি কাঠ বাগান তৈরি, নতুন করে গাছ নালাগানো। সঠিকভাবে এর পরিচর্যা নাকরা এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ ইত্যাদি নানা কারণে উপজেলার খেজুরগাছ বিলীন হতে চলেছে।
উপজেলার মাঝিহট্ট এলাকার আনিছার রহমানের ছেলে গাছি আজাহার আলী জানান, প্রতি বছর শীত মৌসুমে তিনি ৪৫ থেকে ৫০ টি গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করেন।
এক একটি গাছ থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ লিটার রস পাওয়া যায়। প্রতি লিটার রস ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা লিটার বিক্রি করেন তিনি। সূর্য উঠার আগেই তিনি গাছ থেকে ওই রস সংগ্রহ করেন। সকালের মধ্যেই তার সব রস বিক্রি হয়ে যায়। কোন কোন দিন সব রস বিক্রি হয়না। অবিক্রিত রস জাল করে পাতলা ঝোলা গুড় তৈরী করেন। তিনি আরও বলেন, শীত মৌসুমে চারমাসে তিনি খেজুরের রস ও ঝোলা গুড় বিক্রি করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন।
ওই এলাকার গাছি আব্দুল ফকির, মাসুদ আলী, আলতাব আলী, ফয়েজ উদ্দিন, ভোলা মিয়া, বেল্লালের মতো অনেকেই মৌসুমি ব্যবসা হিসাবে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করেন এবং ওই রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা জানান, বাপ-দাদারাও এক সময় খেজুরের রস সংগ্রহ করে বিক্রি করেছেন। এখন আমরা করছি। বাপ-দাদার পেশাটাকে এখনও ধরে রাখার চেষ্টা করছি। দিন পর দিন খেজুরের গাছ কমতে থাকায় শঙ্খিত তারা। এলাকার গাছিরা দাবি জানিয়েন সরকারী ভাবে নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর জন্য।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/dvfz
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন