English

26 C
Dhaka
বুধবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
- Advertisement -

লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি ১৫ হাজার পরিবার

- Advertisements -

কয়েক দিন ধরে ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তৃতীয় দফায় লালমনিরহাট জেলার তিস্তার বাম তীরের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বুধবার সকালে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের ক্ষেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, বাহাদুরপাড়া, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, মোগলহাট, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি প্রবাহ যত বাড়বে বন্যার শঙ্কা ততই বাড়বে। এতে তিস্তার বাম তীরের লালমনিরহাটে তৃতীয় দফায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানির চাপের কারণে বেশ কিছু রাস্তা ও বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

হাতীবান্ধার হলদিবাড়ি চরের আব্দুল মতিন বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকার বাসিন্দারা শিশু-বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন।

আদিতমারীর চর গোবর্দ্ধন এলাকার আজিজুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে হেঁটে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের আটো চালক সেলিম ইসলাম বলেন, নিচু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। পরিবারগুলো পানিবন্দি, রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। পশুপাখি, শিশু, বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ। আমাদের বাড়িতেও পানি ঢুকছে, কিন্তু কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। তাই প্রশাসনের দ্রুত সহযোগিতা কামনা করছি।

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেই আমার ইউনিয়নের ৯ ওয়াডের দেড় হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা জানান, আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুত নেওয়া হয়েছে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/7qdr
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন