English

26.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ৫, ২০২৫
- Advertisement -

গরম তাওয়ায় সয়াবিন তেল পড়ছে ‘স্যালাইন পদ্ধতিতে’! হোটেলে ক্রেতার ভিড়

- Advertisements -

স্যালাইনের প্যাকেট যেমন স্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় রোগীর দেহে প্রবেশ করানো হয়, ঠিক সেভাবেই ফোঁটায় ফোঁটায় সয়াবিন তেল পড়ছে গরম তাওয়ায়। আর এই চিত্র দেখতে হোটেলে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

গত কয়েক দিনে হঠাৎ করে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিজের ছোট পরিসরের হোটেল ব্যবসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মথুরাপুর বড় মসজিদ এলাকার আব্দুল হামিদ। ভোজ্য তেলের দাম লাগামহীন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাধ্য হয়ে পরোটাসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম বাড়াতে হবে।

কিন্তু হোটেলে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিলে ক্রেতাও কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এমন হোটেলে মন্দা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। এ অবস্থায় তেল সাশ্রয়ের ভাবনা থেকে স্যালাইন পদ্ধতিতে পরোটা ভাজার সিদ্ধান্ত নেন আব্দুল হামিদ। এমন কৌশলে তিনি নিজেও সাশ্রয় করতে পারছেন, আবর পরোটার দাম বৃদ্ধি না করে ক্রেতা ধরে রেখে নিজের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছেন এই ব্যবসায়ী। এমন পদ্ধতি দেখতে এবং সেই সাথে পরোটা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন তার হোটেলে। তার সয়াবিন তেলের এই ব্যবহার ‘স্যালাইন পদ্ধতি’ হিসেবে নাম কামিয়েছে।

আব্দুল হামিদ জানান, এমন কৌশলে নিজে লাভবান হচ্ছেন এবং ক্রেতাও ধরে রেখেছেন তিনি। আগে প্রতিদিন ২৫০টি পরোটা ভাজতে প্রায় আড়াই লিটার তেল লাগত। এখন স্যালাইন পদ্ধতিতে দেড় লিটার তেলে ২৫০টি পরোটা ভাজতে পারছেন তিনি। এতে বাজারে তেলের দাম বাড়লেও তার হোটেলে সে প্রভাব পড়েনি, পরোটাসহ অন্যান্য খাবারের দামও বৃদ্ধি করতে হয়নি তাকে।

এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। বাজারের খাবার হোটেলগুলোতে প্রতিটি পরোটা পাঁচ টাকা থেকে বাড়িয়ে কোথাও আট টাকা আবার কোথাও ১০ টাকা করা হয়েছে। অনেক খাবার হোটেলে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি করা হলেও পূর্বের পাঁচ টাকা দরেই প্রতি পিস পরোটা বিক্রি করছেন আব্দুল হামিদ। তেল সাশ্রয় করে ‘স্যালাইন পদ্ধতি’ দেখতে অনেকেই আসছেন তার হোটেলে খাবার খেতে।

মথুরাপুর এলাকার সোলায়মান আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আশপাশের বেশ কয়েকটি হোটেলে পরোটাসহ অন্যান্য খাবারের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আব্দুল হামিদের হোটেলে এখনো পূর্বের দরেই খাবার পাওয়া যাচ্ছে।

রোড সুগার মিল এলাকার বাসিন্দা মনসুর আলম জানান, লোকমুখে আব্দুল হামিদের স্যালাইন পদ্ধতিতে পরোটা ভাজার কথা শুনে তিনিসহ তার দুজন বন্ধু দেখতে এবং পরোটা খেতে এসেছেন।

জেলা তেল গ্যাস কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব আলম রুবেল জানান, খেটে খাওয়া শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি; কিন্তু ভোজ্য তেলসহ যেভাবে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষকে খুব কষ্টে পড়তে হবে। তাই তেলের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে তেল আমদানি বাড়াতে হবে। সেই সাথে বাজার মনিটরিংয়ে আরো কঠোর হতে হবে। তা না হলে বিপাকে পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে।

এদিকে সদর উপজেলা পৌরসভা চৌরাস্তা এলাকার ছোট মুদি ব্যবসায়ী সাহাদাত হোসেন জানান, চাহিদা অনুযায়ী তেল পাচ্ছেন না তারা। অনেক কম্পানি তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। আর যে দু-একটি কম্পানি তেল সরবরাহ করছেন তার পরিমাণ খুবই কম। প্রতি পাঁচ লিটার বোতল তেল কিনতে হচ্ছে ৭৯০ টাকায় এবং বিক্রি করতে হচ্ছে ৭৯৫ টাকায়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামশুজ্জামান জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের বাজারে তেলের সংকট নেই। কেউ অবৈধ মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে বর্তমানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৮ থেকে ১৭০ টাকা এবং ৫ লিটার বোতল তেল ৭৯৫ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/loqd
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন