পঞ্চগড়ের একটি ভুট্টাক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৪ জুন) সকালে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদের আগ মুহূর্তে এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহতরা হলেন—বেংহারি পাড়ার বাসিন্দা সফিউল ইসলামের ছেলে রব্বানী (৩৫), লিয়াকত আলীর ছেলে শাহীন ইসলাম (৪৫) এবং স্থানীয় কলেজছাত্র জামিদুল ইসলাম।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ধাক্কামারা ইউনিয়নের একটি দল চুক্তিভিত্তিতে পাশের ফকিরের হাট এলাকায় ভুট্টাক্ষেতে কাজ করছিল। ১৪ জনের এই দলে ছিলেন নিহত তিনজনসহ আরও কয়েকজন। কাজের সময় ভুট্টাক্ষেতের মধ্যেই পড়ে থাকা বিদ্যুতের একটি ছেঁড়া তার কেউ খেয়াল করেনি। তখন সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
কাজ চলাকালে হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলে জমিতে ছড়িয়ে থাকা তারে স্পর্শ করে কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান কলেজছাত্র জামিদুল ইসলাম।
বাকিদের মধ্যে গুরুতর আহত রব্বানী, শাহীন এবং শাহীনের ভাই জয় ইসলামকে উদ্ধার করে দ্রুত পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে পথেই মারা যান রব্বানী ও শাহীন। জয় ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহত জয় ইসলাম জানান, ‘তারটি আগেই ক্ষেতের মধ্যে পড়ে ছিল, তবে তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ পা ঝিনঝিন করতে শুরু করে। বুঝতে পারি বিদ্যুৎ এসেছে। আমি দৌড়ে বিদ্যুৎ অফিসে বারবার ফোন করি, কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। পরে অন্যরাও ফোন দিলে একপর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয় এবং তখন আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম বলেন, ‘আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে দুইজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্যজনের অবস্থাও গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্থানীয়রা এ দুর্ঘটনার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলাকে দায়ী করেছেন এবং দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।