নিজস্ব প্রতিবেদক: রাত্রী অনুমান রাত ১১টার দিকে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের নিয়মিত রাত্রিকালীন টহল কার্যক্রমের সময় করতোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চোখে পড়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। শেরপুর হাইওয়ে ফাঁড়ির এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আল আমিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা মেট্রো-ন-২০-২৩২১ নম্বরের একটি পিকআপ খোলা ডালায় বসা যাত্রী বহন করছে দেখে তা থামান।
পিকআপটির পেছনের ডালা খোলা ছিল এবং ডালার ওপরে বসেছিলেন দুইজন নারী, দুইজন শিশু ও আরও কয়েকজন যাত্রী। এভাবে ভ্রমণের কারণে যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা আব্দুল্লাপুর থেকে কুড়িগ্রামে যাচ্ছিলেন। পারিবারিক কারণে বাসাবাড়ি পরিবর্তনের জন্য তারা এভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তারা জানান, বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে রাত অবধি কিছু খেতে পারেননি।
মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলেই তাদের জন্য তাৎক্ষণিক খাবারের ব্যবস্থা করে। শুধু তাই নয়, নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে যাত্রীদের মধ্যে ৫ জনকে নাবিল পরিবহনের একটি বাসে ভাড়া দিয়ে কুড়িগ্রামগামী করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি যাত্রা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে খোঁজখবর নিতে থাকে। পরবর্তীতে ভোর ৫টার দিকে তারা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
হাইওয়ে পুলিশ শুধু আইন প্রয়োগ করে প্রসিকিউশন দাখিল করেই সীমাবদ্ধ নয়। মহাসড়কে নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে মানবিক দায়িত্ব পালন করাও হাইওয়ে পুলিশের অঙ্গীকার। এসআই মোঃ আল আমিন বলেন, “আমরা চাই মানুষ নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাই সবাইকে অনুরোধ করছি, কোনোভাবেই এভাবে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করবেন না।”
সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী খোলা পিকআপ বা ট্রাকে যাত্রী বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এতে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে এবং যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাইওয়ে পুলিশ এ ধরনের আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। একইসাথে, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছে।
হাইওয়ে পুলিশের এই মানবিক উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাদের এমন উদ্যোগ যাত্রী সাধারণের মাঝে নিরাপত্তা ও আস্থার বার্তা পৌঁছে দেয়। জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়, সকলে নিরাপদ ভ্রমণ করুন, সড়ক নিরাপত্তা মেনে চলুন।