English

28.8 C
Dhaka
শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫
- Advertisement -

অগ্রিম টিকিট পেতে রেলস্টেশনে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অবস্থান!

- Advertisements -

দুপুর একটা। কমলাপুর রেলস্টেশনের ১৬ নম্বর কাউন্টারের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছেন এক যুবক, নাম আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ। হাতে স্মার্টফোন, কানে ইয়ারফোন। কিছুক্ষণ পরপর স্মার্টফোনে গেমস খেলছেন। বিরতি দিয়ে আবার ফেসবুকে ঢুকছেন। এভাবেই কেটে যাচ্ছে সময়।

কাউন্টারের সামনে চেয়ার পেতে বসে থাকার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ জানান, তিনি ধানমন্ডির একটা ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে আগামী ১ মে ট্রেনে গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে চান। এ জন্য আজ (২৬ এপ্রিল) অফিস থেকে ছুটি নিয়ে অগ্রিম টিকিটের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার (২৭ এপ্রিল) ১ মের টিকিট কাউন্টারে এবং অনলাইনে বিক্রি হবে। তাহলে একদিন আগে কেন এসেছেন- জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনলাইনে ৫০ শতাংশ এবং কাউন্টারে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে অনলাইনে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে টিকিট কাটতে এসেছি। টিকিট না পেলে ঈদে গ্রামে যাওয়া হবে না।

শুধু আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ নন, তার মতো এমন অসংখ্য টিকিটপ্রত্যাশী আজ কমলাপুরে অবস্থান নিয়েছেন। আগামীকাল (২৭ এপ্রিল) সকাল আটটা থেকে ১ মের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল আটটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ৩০ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। টিকিট না পেয়ে অনেকেই ফিরে গেছেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, অগ্রিম টিকিট বিক্রয় ও ব্যবস্থাপনার জন্য কমলাপুর স্টেশনে যাত্রীর চাপ কমাতে ঢাকা শহরের পাঁচটি কেন্দ্র থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কমলাপুরে রেলস্টেশন থেকে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ও খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেন, ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুরগামী ও দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালসহ সব আন্তঃনগর ট্রেন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেন, ফুলবাড়ীয়া পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে আজ সকাল ৮টা থেকে চতুর্থ দিনের মতো ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মতিঝিলে ব্যবসা করেন রাজশাহীর শুভ দাস। তিনিও আগামী ১ মের ট্রেনে পরিবার নিয়ে গ্রামে যেতে চান। অগ্রিম টিকিটের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে অবস্থান নিয়েছেন। কাউন্টারের সামনে পেপার বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি।

আলাপকালে শুভ দাস বলেন, স্বাভাবিক সময়ে অনলাইনে বা কাউন্টারে গেলেই টিকিট পাওয়া যেতো। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে অনলাইনে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। সার্ভারে লগইন-ই করা যাচ্ছে না। তাই কষ্ট হলেও কাউন্টারে টিকিট পেতে অপেক্ষা করছি।

আগামী ১ মের টিকিটের জন্য ৪ নম্বর কাউন্টারে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন রাজশাহীর সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, টিকিটের জন্য আগামীকাল সকাল পর্যন্ত কাউন্টারে অবস্থান করতে হবে। এ দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা সম্ভব না। তাই কাঁথা-বালিশ নিয়ে আসছি।

জানতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, রেলের ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে। তবে অনলাইনে অনেকে টিকিট না পেয়ে কাউন্টারে ভিড় করছেন। বিষয়টি নিয়ে রেলওেয়ের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/uebi
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন