বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একটি অত্যন্ত বিস্তারিত ভার্চুয়াল মাউসের মস্তিষ্ক তৈরি করেছেন। এই মডেল মানব মস্তিষ্ক বোঝা ও আলঝেইমারের মতো রোগের গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালেন ইনস্টিটিউট এবং জাপানের ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রো-কমিউনিকেশনস যৌথভাবে এই প্রকল্প পরিচালনা করে।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো একটি মাউসের পুরো কর্টেক্স (cortex—মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ অংশ) ভার্চুয়ালভাবে পুনর্নির্মাণ করতে পেরেছেন। যদিও মাউসের মস্তিষ্ক মানুষের তুলনায় ছোট ও কম জটিল, তবুও গঠনের দিক থেকে দুটি মস্তিষ্কের মধ্যে বহু গুরুত্বপূর্ণ মিল আছে। তাই এই ভার্চুয়াল মডেল ভবিষ্যতের গবেষণায় মূল্যবান তথ্য দেবে।
ভার্চুয়াল মস্তিষ্কটিতে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ নিউরন এবং ২৬ বিলিয়ন সিন্যাপ্স—যেগুলো ৮৬টি ভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত। সুপারকম্পিউটারটি প্রতি সেকেন্ডে বিপুল পরিমাণ গণনা করতে পারে। ফলে মস্তিষ্কের ভেতরে কীভাবে সংকেত আদান–প্রদান হয় তা খুব কাছ থেকে দেখা সম্ভব।
তুলনামূলকভাবে বাস্তব মস্তিষ্কে প্রায় ৭ কোটি নিউরন থাকে, যা আকারে একটি বাদামের মতো। কিন্তু জীবন্ত মস্তিষ্কে যেসব পরীক্ষা করা কঠিন বা অসম্ভব, সেগুলো এই ভার্চুয়াল মডেলে করা যাবে বলেই গবেষকেরা মনে করছেন। এতে স্নায়বিক রোগ সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা পাওয়া যাবে।
অ্যালেন ইনস্টিটিউটের কম্পিউটেশনাল নিউরোসায়েন্টিস্ট অ্যান্টন আরখিপভ বলেন, এটি দেখাচ্ছে আমরা সঠিক পথে আছি। পর্যাপ্ত কম্পিউটিং শক্তি পেলে আরও বড় ও নির্ভুল মস্তিষ্কের মডেল বানানো সম্ভব।
এই গবেষণার ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত SC25 সুপারকম্পিউটিং সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয় এবং অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে।
