নাসিম রুমি: বিশ্বকাপের মঞ্চে তাদের শুরুটা হয়েছিল একসাথেই। রূপকথার গল্পের মতো দুই কিংবন্দন্তির শেষটাও হচ্ছে ঠিক একইভাবে, একসাথেই! আর্জেন্টিনার পর ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপে পৌঁছে গেছে পর্তুগালও। লিওনেল মেসির মতো তাই আগামী বছর নিজের শেষ বিশ্বকাপে মাঠে নামবেন তারই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
মেসি ও রোনালদোর দুজনেরই বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। জার্মানিতে জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে অভিষেক হয় দুই তরুণ ফুটবলারের।
এরপর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ২০ বছর। এই সময়ে আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের প্রাণভোমরা হয়ে উঠেছেন মেসি ও রোনালদো। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ, ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ, ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ ও ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে নিজ নিজ জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নেমেছেন মেসি ও রোনালদো।
আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন মেসি। গোল করেছেন ১৩টি, অ্যাসিস্ট ৮টি। আর্জেন্টিনাকে ২০১৪ সালের ফাইনালে নিয়ে গেলেও অল্পের জন্য শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল মেসির। সেই আক্ষেপ ঘুচেছে ২০২২ সালে এসে। মেসি জাদুতেই ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখেছে আর্জেন্টিনা। মেসি সেবার জানিয়েছেন, এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ।
অন্যদিকে বিশ্বকাপ মানেই যেন পর্তুগাল ও রোনালদোর হতাশার অন্য নাম। বিশ্বকাপের মঞ্চে ২২ ম্যাচে রোনালদোর গোল ৮টি, অ্যাসিস্ট ২টি। দলকে কখনোই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিতে পারেননি রোনালদো। কাতার বিশ্বকাপে পর্তুগালের বিদায়ের পর চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন রোনালদো। ধারণা করা হয়েছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে আর দেখা যাবে না তাকে।
তবে গত ৪ বছরে পালটে গেছে সব হিসেব নিকেশ। ৪০ ও ৩৮ বছর বয়সে দিব্যি খেলে যাচ্ছেন রোনালদো ও মেসি। জাতীয় দল কিংবা ক্লাব; দুই জায়গায়তেই দারুণ সফল এই দুই কিংবদন্তি।
রোনালদো আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপই হবে তার শেষ বিশ্বকাপ। অন্যদিকে বিশ্বকাপে খেলার ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে কিছু না জানালেও ধরেই নেওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া আসন্ন বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দেবেন মেসি। মেসি ও রোনালদোর আগে মাত্র ৪ জন ফুটবলার ৬টি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়েছেন।
শুরুটা হয়েছিল ২০০৬ সালে, শেষটা হবে ২০২৬। নিজেদের শেষ বিশ্বকাপে কেমন করবেন মেসি ও রোনালদো? বিশ্বকাপে কখনোই মুখোমুখি না হওয়া মেসি ও রোনালদোর কি এবার মুখোমুখি হবেন? সেটার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত।
