ভুটানের নারী লিগে অনেক আগেই প্রস্তাব পেয়েছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। একাধিক খেলোয়াড়ের কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল ভুটানের লিগ নাকি মানসম্মত নয়। তাই তারা আগ্রহী নন। কিন্তু মাস দুই আগে সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ১৮ খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে জনে জনে ১০ জন ফুটবলার ভুটান লিগের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়লেন। সাবিনা খাতুন, মাতসুশিমা সুমাইয়া, ঋতুপর্না চাকমা, মনিকা চাকমা, আগে গিয়েছেন, তারা খেলবেন পারো এফসির জার্সি গায়ে।
গতকাল ভুটানে গিয়েছেন সানজিদা আক্তার, সিনিয়র শামসুন নাহার, মারিয়া মান্ডা; তারা খেলবেন থিম্পু সিটির জার্সি গায়ে। গোলরক্ষক রূপনা চাকমা এবং মাসুরা পারভীন ও কৃষ্ণ রানী চাকমা খেলবেন ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড-এর জার্সি গায়ে। রূপনা চাকমা মাসুরা পারভীন গতকাল সানজিদা, মারিয়াদের সঙ্গে একই বিমানে ভুটান গেছেন। কৃষ্ণা রানী সরকার যাবেন, তার ওয়ার্ক পারমিট হাতে এলেই বিমানে উঠবেন। নিজেকে ফিট রাখতে গতকাল দুপুরে বাফুফের জিমে কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের মেয়ে কৃষ্ণা। মাসে ৬০০ ডলার বেতনে খেলবেন বাংলাদেশের মেয়েরা।
অনুশীলনে না থাকার কারণে কোচবিরোধী ফুটবলাররা ফিটনেসের মধ্যে ছিলেন না। এ অবস্থায় ভুটানে লিগ খেলতে গিয়েছেন। জুনের শেষ সপ্তাহে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশের খেলা রয়েছে। বলা হচ্ছে, তখন ডাকা হলেই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেবেন সানজিদারা। তবে বাংলাদেশের ফুটবলারদের টার্গেট হচ্ছে, ভুটানের হয়ে এএফসি কাপ ওমেন্স ফুটবলে খেলা। বাংলাদেশের ফুটবলারদের নিয়ে ভুটানের তিন ক্লাব শক্তিশালী দল গড়েছে। ঢাকা ছাড়ার আগে সানজিদা জানিয়েছেন, তিনটা ক্লাব ভালো দল করেছে। এএফসি ক্লাব কাপে খেলার সুযোগ রয়েছে। থিম্পু সিটি, পারো এফসি এবং ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড শক্তিশালী দল গড়েছে।
নারী সাফে পর পর দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও ঘরোয়া ফুটবলে নারী খেলোয়াড়দের প্ল্যাটফর্ম উন্নতি হয়নি। সাফ জিতেও দেশের নারী ফুটবলে ঘরোয়া লিগ আয়োজনে সাড়া জাগাতে পারেনি। ফলে এএফসি নারী ক্লাব ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থানও নেই। তৈরি করতে পারত, পরিকল্পনা না থাকায় সেটি করতে পারেনি। সহজ কথা পিছিয়ে রয়েছে। অথচ ২০১৬ সাল থেকে নারী ফুটবল লিগ শুরু করে ভুটান। আর এই স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তারা বিদেশি খেলোয়াড় দলে নিচ্ছে।
বাংলাদেশের সাফজয়ী নারী ফুটবলাররা যেভাবে এগিয়ে ছিলেন, তাতে এএফসি কাপের বড় মঞ্চে খেলতে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সেটা তো হয়নি। ভুটানের ক্লাবে খেলে সেই সুযোগটা গ্রহণ করতে চান সানজিদারা। ঢাকা ছাড়ার আগে সানজিদার চোখে এএফসি কাপের মঞ্চ। খুব ব্যস্ত সময় গেছে সানজিদার। সানজিদা জানালেন, তারা যে তিনটা ক্লাবের হয়ে খেলবেন, সেই দলগুলোর ভালো সম্ভাবনা রয়েছে, এএফসি কাপে খেলার। নিজে সুযোগ না পেলেও তাদের একটা ক্লাব যদি এএফসি কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, তাহলে সেই দলের হয়ে বাংলাদেশি ফুটবলারও এএফসি কাপে খেলার সুযোগ পেতে পারেন।