তুরস্কের ফুটবলে এক নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়েছে। দেশটির ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ) জানিয়েছে, শত শত ম্যাচ কর্মকর্তা বছরের পর বছর ধরে জুয়াখেলায় যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছরের তদন্ত শেষে ফেডারেশন এখন শৃঙ্খলাভঙ্গের মামলা শুরু করছে।
তদন্তে জানা যায়, ৫৭১ জন সক্রিয় রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনের অন্তত একটি বেটিং কোম্পানির অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ১৫২ জন নিয়মিতভাবে জুয়ায় অংশ নিয়েছেন, আর ৪২ জন রেফারি এক হাজারেরও বেশি ম্যাচে বাজি ধরেছেন। এমনকি একজন কর্মকর্তার ক্ষেত্রে ১৮ হাজার ২২৭টি পৃথক বেটিং রেকর্ড পাওয়া গেছে।
ইস্তাম্বুলে সংবাদ সম্মেলনে টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম এতেম হাজিওসমানওগ্লু বলেন, ‘তুর্কি ফুটবলকে তার প্রাপ্য জায়গায় ফেরাতে হলে, আগে যা কিছু নোংরা আছে, সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।’
তিনি জানান, সংশ্লিষ্টদের নাম প্রকাশ করা হবে না, তবে তালিকায় তুরস্কের শীর্ষ দুই লীগের ৭ জন রেফারি ও ১৫ জন সহকারী রেফারি রয়েছেন। এছাড়া নিচের স্তরের লিগ থেকে রয়েছে ৩৬ জন শ্রেণিভুক্ত রেফারি ও ৯৪ জন সহকারী রেফারি। দোষীদের ফেডারেশনের শৃঙ্খলাবিষয়ক বোর্ডে পাঠানো হবে এবং তারা প্রয়োজনীয় শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
ফেডারেশনের শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী, খেলোয়াড়, কোচ বা কর্মকর্তা কারও জন্যই বেটিংয়ে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে, ফিফার নীতিমালার ২৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, রেফারিদের কেউ বেটিংয়ে জড়িত প্রমাণিত হলে তাকে ১ লাখ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ৯৪ হাজার পাউন্ড) জরিমানা এবং সর্বোচ্চ তিন বছরের জন্য ফুটবল সংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর তুরস্কের বড় ক্লাবগুলোও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বেসিকতাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই তদন্তের ফলাফল তুর্কি ফুটবলে স্বচ্ছতার নতুন সূচনা হতে পারে।’
ত্রাবজনস্পোর জানিয়েছে, ‘এটি তুর্কি ফুটবলে ন্যায়বিচার পুনর্গঠনের ঐতিহাসিক সুযোগ।’
ফেনারবাচে সভাপতি সাদেত্তিন সারান বলেন, ‘এটা যেমন চমকপ্রদ, তেমনি গভীরভাবে হতাশাজনকও। তবে সত্যটা প্রকাশ্যে আসা নিঃসন্দেহে এক ইতিবাচক দিক।’
